আল্লাহ তায়ালার ইবাদাত হতে হবে শিরকমুক্ত
ডাঃ গাজী মোঃ নজরুল ইসলাম
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি রব্বুল আলামীন। দুরুদ ও সালাম রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি,তার পরিবারবর্গ,বংশধর,সাহাবায়ে কিরাম (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) ও সালেহীণ (রহমাতুল্লাহি
আলাইহিম)-গণের প্রতি। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,আল্লাহ ছাড়া কোন
ইলাহ নাই এবং মুহাম্মাদ (স) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল। নিশ্চয়ই শুভ পরিণতি
কেবলমাত্র রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খুলাফায়ে রাশিদীনে এবং
সাহাবা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম)-গণের অনুসৃত কল্যাণময় আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই নিহিত।
আল্লাহর
সাথে কোন প্রকার শরিক সাব্যস্ত করা বান্দার জন্য অমার্জনীয় অপরাধ। আল্লাহ তা’য়ালা উপর বিশ্বাস স্থাপনের
পর আল্লাহর ইবাদাত করার সাথে সাথে জীবনের কোন ক্ষেত্রে যদি অন্য কিছু প্রশয় দেয়া
হয় তাহলে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে এবং তা শিরক হিসাবে গণ্য হবে। আল্লাহ তা’য়ালা এই ব্যক্তির ঈমান বা
শিরক মিশ্রিত আমল তথা ইবাদাত কোন কিছুই কবুল করবেন না। এ ব্যপারে সাবধানতার জন্য
কুরআন ও হাদীসের কতিপয় বানী পেশ করা হল।
শিরক বিহীন ইবাদাতই আল্লাহ তা’য়ালার নিকট গ্রহণযোগ্যঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : "যারা ঈমান আনবে এবং এর সাথে কোন প্রকার জুলুম
(শিরক) মিশ্রিত করবে না, তাদের জন্য রয়েছে নিরাপত্তা আর তারাই হিদায়াত প্রাপ্ত।" - (সূরা আনআমঃ
আয়াত ৮২)
ঈমানদারগণের বিশ্বাসের ক্ষেত্রে শিরকঃ মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন : "অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি
বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে। তারা কি নির্ভীক হয়ে গেছে এ
বিষয়ে যে, আল্লাহর আযাবের কোন বিপদ তাদেরকে আবৃত করে ফেলবে অথবা তাদের কাছে হঠাৎ
কেয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা টেরও পাবে না?
" -(সূরা
ইউসুফঃ আয়াত ১০৬-১০৭)
ইবাদাতের ক্ষেত্রে শরীক করাঃ মহান আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন বলেনঃ "(হে রাসূল!) আপনি বলুন, আমি তো একজন মানুষ তোমাদেরই মতো, আমার
প্রতি অহী করা হয় এ মর্মে যে, এক আল্লাহ তোমাদের ইলাহ, কাজেই যে তার রবের
সাক্ষাতের প্রত্যাশী তার উচিত সৎকাজ করা এবং ইবাদাতের ক্ষেত্রে স্বীয় প্রভুর সাথে
কাউকে শরীক না করা।"
-(সুরা কাহফঃ আয়াত ১১০)
তিনি আরও
বলেনঃ "মানুষের মধ্যে কেউ কেউ
দ্বিধা-দ্বন্দ্বে জড়িত হয়ে গেলে আল্লাহর এবাদত করে। যদি সে কল্যাণ প্রাপ্ত হয়, তবে
এবাদতের উপর কায়েম থাকে এবং যদি কোন পরীক্ষায় পড়ে, তবে পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়। সে
ইহকালে ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত। এটাই প্রকাশ্য ক্ষতি। সে আল্লাহর পরিবর্তে এমন
কিছুকে ডাকে, যে তার অপকার করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। এটাই চরম
পথভ্রষ্টতা।" -(সূরা
হাজ্জঃ আয়াত ১১-১২)
লোক দেখানো ইবাদাতের মাধ্যমে গোপন শিরক করাঃ হযরত মাহমুদ ইবনে লাবীদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (এক দিন) বাহিরে তাশরিফ আনলেন এবং ইরশাদ করলেন: "গোপন শিরক থেকে তোমরা বেঁচে থাক!" সাহাবগণ আরজ করলেন, "হে
আল্লাহর রাসূল! গোপন শিরক কি?" রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন: "গোপন শিরক হলো, এক
ব্যক্তি যখন নামাযের উদ্দেশ্যে দাঁড়ায় তখন সে তার নামাযকে খুবই গুরুত্ব সহকারে
পড়তে থাকে শুধু এই উদ্দেশ্যে যে, কেউ তাকে নামায পড়তে দেখতেছে। সুতরাং এটাই হলো
গোপন শিরক।" -(তারগীব,ইবনে মাজাহ ও মিশকাত)
ভালবাসার ক্ষেত্রে শিরকঃ মহান আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন বলেন : "আর কোন লোক এমনও
রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি
ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা আল্লাহর
প্রতি ঈমানদার তাদের ভালবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী। আর কতইনা উত্তম হত যদি এ জালেমরা পার্থিব
কোন-কোন আযাব প্রত্যক্ষ করেই উপলব্ধি করে নিত যে, যাবতীয় ক্ষমতা শুধুমাত্র
আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহর আযাবই সবচেয়ে কঠিনতর।" -(সূরা বাক্বারাহঃ আয়াত ৯৬)
তাওয়াক্কুলের ক্ষেত্রে শরীক করাঃ মহান
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : "যদি আল্লাহ
তোমাদের সহায়তা করেন, তাহলে কেউ তোমাদের পরাজিত করতে পারবে না। আর যদি আল্লাহ
তোমাদের সাহায্য না করেন, তবে এমন কে আছে, যে তোমাদের সাহায্য করতে পারে? আর মুসলমানদের আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত।"
-(সূরা
আলে ইমরানঃ আয়াত ১৬০)
বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে শিরক করাঃ মহান
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : "তোমাদের
জন্যে ইবরাহীম ও তার সংঙ্গীগণের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। তারা তাদের সম্প্রদায়কে
বলেছিল, তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহ ব্যাতীত যার এবাদত কর, তার সাথে আমাদের কোন
সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না
করলে তোমাদের ও আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা থাকবে।" -(সূরা
মুমতাহানাহঃ আয়াত ৪)
জীবন-মৃত্যর ব্যপারে বিশ্বাসের ক্ষেত্রে শিরক করাঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেনঃ "আল্লাহর
হুকুম ছাড়া কেউ মরতে পারে না-সেজন্য একটা সময় নির্ধারিত রয়েছে। বস্তুতঃ যে লোক
দুনিয়ায় বিনিময় কামনা করবে, আমি তাকে তা দুনিয়াতেই দান করব। পক্ষান্তরে-যে লোক
আখেরাতে বিনিময় কামনা করবে, তা থেকে আমি তাকে তাই দেবো। আর যারা কৃতজ্ঞ তাদেরকে
আমি প্রতিদান দেবো।" - (সূরা আলে-ইমরানঃ আয়াত ১৪৫)
তিনি আরও
বলেনঃ "হে ঈমাণদারগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো
না, যারা কাফের হয়েছে এবং নিজেদের ভাই বন্ধুরা যখন কোন অভিযানে বের হয় কিংবা
জেহাদে যায়, তখন তাদের সম্পর্কে বলে, তারা যদি আমাদের সাথে থাকতো, তাহলে মরতোও
না আহতও হতো না। যাতে তারা এ ধারণা সৃষ্টির মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মনে অনুতাপ
সৃষ্টি করতে পারে। অথচ আল্লাহই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দেন। তোমাদের সমস্ত কাজই,
তোমরা যা কিছুই কর না কেন, আল্লাহ সবকিছুই দেখেন।"
-(সূরা আলে-ইমরানঃ আয়াত ১৫৬)
লোক দেখানো দানের মাধ্যমে শিরকঃ মহান
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন: "আর সে সমস্ত
লোক যারা ব্যয় করে স্বীয় ধন-সম্পদ লোক-দেখানোর উদ্দেশে এবং যারা আল্লাহর উপর
ঈমান আনে না, ঈমান আনে না কেয়ামত দিবসের প্রতি এবং শয়তান যার সাথী হয় সে হল
নিকৃষ্টতর সাথী। আর কিই বা ক্ষতি হত তাদের যদি তারা ঈমান আনত আল্লাহর উপর কেয়ামত
দিবসের উপর এবং যদি ব্যয় করত আল্লাহ প্রদত্ত রিযিক থেকে! অথচ আল্লাহ, তাদের
ব্যাপারে যথার্থভাবেই অবগত। নিশ্চয়ই আল্লাহ কারো প্রাপ্য হক বিন্দু-বিসর্গও রাখেন
না। আর যদি
তা সৎকর্ম হয়, তবে তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং নিজের পক্ষ থেকে বিপুল সওয়াব দান
করেন।" -(সূরা নিসাঃ আয়াত ৩৮-৪০)
আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের ওয়াসীলা মনে করে শিরকঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : "জেনে রাখো! নিষ্ঠাপূর্ণ
এবাদত শুধুমাত্র আল্লাহরই নিমিত্ত। যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে
রেখেছে এবং বলে যে, আমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর
নিকটবর্তী করে দেয়। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে তাদের পারস্পরিক বিরোধপূর্ণ বিষয়ের
ফয়সালা করে দেবেন। আল্লাহ মিথ্যাবাদী কাফেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।"
-
(সূরা ঝুমারঃ আয়াত ৩)
পন্ডিত ও ধর্মীয় নেতাদের আনুগত্যের মাধ্যমে শিরকঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন: "তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের পণ্ডিতগণ ও সংসার-বিরাগীদের রব
হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং মারইয়ামপুত্র মাসীহকেও। অথচ তারা এক ইলাহের ইবাদাত করার
জন্যই আদিষ্ট হয়েছে, তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তারা যে শরীক করে তিনি তা থেকে
পবিত্র।" -(সূরা তাওবাঃ আয়াত ৩১)
নেতৃবৃন্দ ও বড়দের আনুগত্যের মাধ্যমে শিরকঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : "যেদিন
তাদের মুখমণ্ডল অগ্নি উলট-পালট করে দিবে সেদিন তারা বলবে, হায় আফসোস! আমরা যদি
আল্লাহকে মানতাম ও তাঁর রাসুলকে মানতাম! তারা আরও বলবে, হে আমাদের রব! আমরা আমাদের নেতৃবৃন্দ ও বড়দের বড়দের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল, হে
আমাদের রব!
তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করুন এবং
তাদেরকে দিন মহা অভিশম্পাত।" -(সূরা আহযাবঃ আয়াত ৬৬-৬৮)
বাপ-দাদাদের আনুগত্যের মাধ্যমে শিরকঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : "যখন
তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান এবং রসূলের দিকে এসো তখন তারা বলে, আমাদের
জন্যে তাই যথেষ্ট, যার উপর আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে পেয়েছি। যদি বাপ-দাদারা কোন
জ্ঞান না রাখে হেদায়াতপ্রাপ্ত না হয়, তবুও কি তারা তাই করবে?"
-(সূরা মায়েদাহঃ আয়াত ১০৪)
শক্তি পুজার মাধ্যমে শিরকঃ আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন বলেন : "সত্যের আহ্বান তাঁরই, আর
যারা তাকে ছাড়া অন্যদেরকে ডাকে, তারা তাদের ডাকে সামান্যও সাড়া দিতে পারে না, বরং
(তারা) ঐ ব্যক্তির মত, যে পানির দিকে তার দু’হাত বাড়িয়ে দেয় যেন তা তার মুখে পৌঁছে অথচ তা তার কাছে
পৌঁছবার নয়। আর কাফেরদের ডাক তো শুধু ভ্রষ্টতায় পর্যবসিত হয়।"
-(সূরা রাদঃ আয়াত ১৪)
মুর্তি পুজার মাধ্যমে শিরকঃ আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন বলেন : "হে মানুষ একটি উপমা পেশ করা
হল, মনোযোগ দিয়ে তা শোন, তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক তারা কখনো একটি মাছিও
সৃষ্টি করতে পারবে না। যদিও তারা এ উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়। আর যদি মাছি তাদের
কাছ থেকে কিছু ছিনিয়ে নেয়, তারা তার কাছ থেকে তাও
উদ্ধার করতে পারবে না। অন্বেষণকারী ও যার কাছে অন্বেষণ করা হয় উভয়েই দুর্বল।" -(সূরা হজঃ
আয়াত ৭৩)
সুপারিশকারী মনে করে আত্মা পুজার মাধ্যমে শিরকঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : "তারা
আল্লাহকে ছেড়ে এমন কিছুর ইবাদাত করে, যারা না পারে তাদের ক্ষতি করতে আর না পারে
কোন ভাল করতে এবং বলে, এরা আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী। আপনি বলে দিন! তোমরা
কি আল্লাহকে আসমান ও জমিনের মধ্যে ঐ জিনিস শিখাতে চাও যা তিনি জানেন না। তারা যে সব
শিরক করছে আল্লাহ এর থেকে পবিত্র ও উচ্চ।"-(সূরা ইউনুসঃ আয়াত ১৮)
ইসলামী বিধানের পরিবর্তে অন্যান্য বিধান গ্রহণের মাধ্যমে শিরকঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : "নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন
একমাত্র ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার
পরও ওরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষ বশতঃ, যারা আল্লাহর
নিদর্শনসমূহের প্রতি কুফরী করে তাদের জানা উচিত যে, নিশ্চিতরূপে আল্লাহ হিসাব
গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত।" -[সুরা আলে ইমরানঃ
১৯]
আল্লাহর সাথে শরিককারীর ভয়াবহ পরিনামঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : "আর
যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দেন আর তার
চিরস্থায়ী ঠিকানা হবে জাহান্নাম। আর ঐ সমস্ত জালিমদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না।" -(সূরা মায়েদাঃ আয়াত ৭২)
আল্লাহ
তা’য়ালা
মানব জাতিকে এ মহাসত্য অনুধাবন করার তৌফিক দান করুন! ইখলাসের সাথে আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে
শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদাত বা গোলামী করার তৌফিক দান করুন! সকল প্রকার শিরক থেকে
রক্ষা করুন! এবং তাঁর মাহবুব বান্দাগণের অন্তর্ভূক্ত করুন! আ-মী-ন।

No comments:
Post a Comment