Tuesday, June 3, 2014

মদীনা সনদের প্রধান প্রধান শর্তাবলি


মদীনা সনদের প্রধান প্রধান শর্তাবলি

মহানবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতৃক ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে মদীনায় বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এ চুক্তিটি 'মদীনা সনদ' নামে পরিচিত বিশ্বের ইতিহাসে 'মদীনা সনদ' একটি অতীব গুরুত্বপূর্ন সনদ মদীনা সনদের প্রধান প্রধান শর্তাবলির সারর্ম নিম্নরূপ :

১. মদিনার ইয়াহূদী, পৌত্তলিক ,খ্রিস্টান ও মুসলিম সকলে একই জনগোষ্টী বা কওম বলে গন্য হবে এবং তারা অন্যন্য জনগোষ্টী হতে স্বতন্ত্র থাকবে তারা সকলেই সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে

২. হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নব-গঠিত সাধারণতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান থাকবেন এবং পদাধিকারবলে তিনি মদীনার ইসলামী রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বিচারালয়ের সর্বময় কর্তা হবেন

৩. সকল সম্প্রদায়ের লোকদের জন্য পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় থাকবে সকলেই বিনা দ্বিধায় নিজ নিজ ধর্ম-পালন করতে পারবে এবং কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না

৪. মদীনা নগরী সকলের জন্য পবিত্র বলে গণ্য হবে এবং এজন্য রক্তপাত, হত্যা, বলৎকার ও অপরাপর অপরাধমূলক কার্যকলাপ একেবারেই নিষিদ্ধ করা হল

৫. স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহ মদীনা শহরের মর্যাদা রক্ষা করবে মদীনা সহসা আক্রান্ত হলে তারা সকলে একত্রিত হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে এবং যখন তাদেরকে কোন যুদ্ধে অবসান ঘটিয়ে সন্ধি করতে বলা হবে তখন তারা যুদ্ধ বন্ধ করবে এবং তা মেনে চলবে

৬. হযরত মুহম্মদ মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পূর্ব সম্মতি ব্যতিরেকে মদীনাবাসীরা কারো বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ ঘোষনা করতে পারবে না যুদ্ধের সময় প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজের ব্যয়ভার বহন করবেমদীনার জাতীয় স্বার্থে পরিপন্থী কোন গুপ্ত ষরযন্ত্রে কোন বহিঃশত্রুর সঙ্গে লিপ্ত হতে পারবে না

৭. কোন সম্প্রদায় গোপনে কুরাইশদের সাথে কোন প্রকার সন্ধি করতে পারবে না কিংবা মদীনা বা মদীনাবাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে কুরাইশদের কোনরুপ সাহায্য-সহযোগীতা করতে পারবে না

৮. স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহের কোন ব্যক্তি অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবেই গণ্য করা হবে এর জন্য গোটা সম্প্রদায়কে দোষী করা যাবে না

৯. আশ্রয়প্রাপ্ত প্রতিবেশী কোন প্রকার নাশকতামূলক অথবা বিশ্বাসঘাতকতামূলক কাজে লিপ্ত না থাকলে আপনজন বলে বিবেচিত হবে দুর্বল ও অসহায়কে সর্বত্তোভাবে সাহায্য ও রক্ষা করতে হবে

১০. মুসলমান, ইহুদী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা সমান নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করবেকেউ যদি অন্যায় কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে সবাই মিলে তার বিরুদ্ধে যথোচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেনিজ সন্তান বা আত্নীয় হলেও এ ব্যাপারে তাকে ক্ষমা করা যাবে না

১১. অপরাধীদের রীতিমত বিচার ও শাস্তি হবে সব ধরনের পাপাচারী, অন্যায়কারী ও দুর্নীতিপরায়ণদেরকে ঘৃণার চোখে দেখতে হবে এবং কেউই এদেরকে সাহায্য করতে পারনে না , এমনকি নিকটতম আত্মীয় হলেও না

১২. তারা পরস্পরের মধ্যে নাশকতামূলক বা বিশ্বাসঘাতকতামূলক কোন কাজে লিপ্ত হবে না যদি স্বাক্ষরকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরা কোন প্রকার বিশ্বাসঘাতকতা না করে তবে তাদের সঙ্গে সন্মানজনক ব্যবহার করা হবে

১৩. স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহের মধ্যে ভবিষ্যতে যত ঝড়গা-বিবাদ উপস্থিত হবে, সে সমস্তই মীমাংসার জন্য হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সম্মুখে উপস্থিত করতে হবে এবং আল্লাহর নিধান অনুযায়ী তার মিমাংসা করবেন

এ সনদ যে বা যারা ভঙ্গ করবে তার বা তাদের আল্লাহর অভিসম্পাত


No comments:

Post a Comment