Tuesday, July 1, 2014

হাদীস শরীফের কতিপয় মাসনুন দোয়া


হাদীস শরীফের কতিপয় মাসনুন দোয়া

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা'য়ালার জন্য যিনি রব্বুল আলামীন। দুরুদ ও সালাম রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি যিনি রহমাতুল্লিল আলামীন, তাঁর পরিবারবর্গ, সাহাবায়ে কিরাম (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) এবং সালেহীন (রহ.)-গণের প্রতি। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই। আমরা আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বান্দাহ ও রসূল। নিশ্চয়ই শুভ পরিণতি মুত্তাকীনদের জন্য নির্ধারিত।

আল্লাহ তা’য়ালার সন্তোষ ও মহব্বত অর্জনের জন্য যারা সাধনা করতে চান, তাদেরকে অবশ্যই জীবনের প্রতিটি কাজকে ইবাদাতে পরিণত করতে হবে আর প্রতিটি মুহুর্তকেই আল্লাহর জিকিরে পরিণত করতে হবে। নিয়মিত মাসনুন দোয়ার সেই মহান লক্ষ্যে পৌছার একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ মাত্র। সহজে আমলযোগ্য কয়েকটি ছোট ছোট মাসনুন দোয়া সবার বিবেচনা ও আমলের জন্য হাদীসের দলিলসহ পেশ করা হল-

১) যে কোন কাজের শুরুতে ও শেষে দোয়াঃ যে কোন কাজ আল্লাহর নামে শুরু করা উচিৎ। অন্যথায় শয়তান তাতে অংশীদার হয়ে যায়। যে কোন কাজ সফলতার সাথে শেষ করার পর আল্লাহর প্রশংসা করা উচিৎ। অন্যথায় শয়তান তার ফলাফলের মাঝে রিয়া ও কিবির নামক দুটি বিধ্বংসী রোগের অণুপ্রবেশ ঘটায়। কোন আমল বা কাজের জন্য নির্দিষ্ট দোয়ায়ে মাসনুন জানা না থাকলে প্রত্যেক কাজের শুরুতে- بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ  বা সংক্ষেপে অন্তত بِسْمِ اللهِ  বলা এবং শেষে-  اَلْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْن বা সংক্ষেপে অন্তত اَلْحَمْدُ للهِ বলা। এতে কাজে আল্লাহর সাহায্য, রহমত ও বরকত পাওয়া যায়।

কাজ সম্পাদনের কতিপয় আদব : কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তোষ অর্জনের নিয়ত করা, বিছমিল্লাহ... বলে আল্লাহর নামে শুরু করা, আল্লাহর হুকুম মোতাবেক করা, রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ মোতাবেক করা, সাহাবাগনের (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) নমুনায় করা, সততা ও আমানতদারীর সাথে চাকুরী বা পেশাগত কাজ সম্পাদন করা, কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের হক সম্পর্কে লক্ষ্য রাখা, শিরক-রিয়া-কিবির-জাহিলিয়াত-নাফসানিয়াতমুক্ত হওয়া, সফল হলে শেষে আলহামদুলিল্লাহ.. বলা, ব্যর্থ হলে শেষে ইন্না লিল্লাহ.. পড়া, কাজের মধ্যে ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য তওবা-ইস্তিগফার করা।

২) আজান শুনে পাঠ করার দোয়াঃ হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি আযান শুনে বলে-

اَللّهُمَّ رَبَّ هذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدَانِ الْوَسِيْلَةَ وَالْفَضِيْلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَّحْمُوْدًانِ الَّذِيْ وَعَدْتَّه

(হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত সালাতের তুমিই প্রভু! তুমি মুহাম্মাদ (স) কে অসীলা বা বিশেষ নৈকট্য ও মর্যাদা দান কর এবং তাকে তোমার ওয়াদাকৃত প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও)- তার জন্য কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে যাবে। -(তিরমিযী : হাসান ও সহীহ, বুখারী, আবু-দাউদ, নাসাই ও ইবনে মাজাহ)

অন্য বর্ণনায়ঃ হযরত সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের আযান শুনে বলবে-

أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَه وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُوْلُه رَضِيْتُ بِاللّهِ رَبًّا وَّبِمُحَمَّدٍ رَّسُوْلًا وَّبِالْإِسْلَامِ دِيْنًا

(আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তার কোন শরীক নাই আর মুহাম্মাদ (স) তার বান্দা ও রসুল। আমি আল্লাহকে প্রভু হিসাবে, মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রসূল হিসাবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছি)- তার পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (তিরমিযী : হাসান ও সহীহ)

আযানের জবাব দেওয়াঃ  হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : মুয়াজ্জিন যখন আল্লাহু আকবার , আল্লাহু আকবার বলে তখন তোমাদের কেউ আল্লাহু আকবার , আল্লাহু আকবার বলল। তারপর মুয়াজ্জিন যখন আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লালাহু বলে, তখন সেও আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লালাহু বলল। অতঃপর মুয়াজ্জিন যখন আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ বলে, তখন সেও আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ বলল। পরে মুয়াজ্জিন যখন হাইয়্যা ‘আলাস সালাহ বলে, তখন সে লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলল। এরপর মুয়াজ্জিন যখন হাইয়্যা ‘আলাল ফালাহ বলে, তখন সেও লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলল। তারপর মুয়াজ্জিন যখন আল্লাহু আকবার , আল্লাহু আকবার বলে, তখন সেও আল্লাহু আকবার , আল্লাহু আকবার বলল, তারপর মুয়াজ্জিন যখন লা ইলাহা ইল্লালাহু বলে, তখন সেও লা ইলাহা ইল্লালাহু বলল। -এসবই যদি সে বিশুদ্ধ অন্তরে বলে থাকে তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। -(মুসলিমঃ ২/৭৪৯)

৩) পায়খানায় প্রবেশকালীন দোয়াঃ হযরত আনাস ইরনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানায় প্রবেশের সময় বলতেন-

اَللّهُمَّ إِنّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ

(হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে নিকৃষ্ট পুরুষ ও স্ত্রী জ্বীন বা শয়তানের অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় চাই)- বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ ও নাসাই।

৪) পায়খানা থেকে বের হওয়ার সময় পাঠ করার দোয়াঃ হযরত আইশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানা থেকে বের হওয়ার সময় বলতেন :  غُفْرَانَكَ (হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি)- তিরমিযী।

অন্য বর্ণনায়ঃ হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানা থেকে বের হওয়ার সময় বলতেন :

اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِيْ أَذْهَبَ عَنِّي الْأَذى وَعَافَانِيْ

-(ইবনে মাজাহ) দুটি দোয়া একত্রে মিলিয়ে পাঠ করলে উভয় হাদীসের আমল করা হয়।

ইস্তিঞ্জার আদব : ইস্তিঞ্জার জায়গায় প্রবেশের আগে বিসমিল্লাহসহ দোয়া পাঠ করা। পায়ে জুতা-সেন্ডেল রাখা। মাথা ঢেকে রাখা। বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা। বসে ইস্তিঞ্জা করা, দাড়িয়ে বা হাটতে হাটতে না করা। ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা। পানি দিয়ে শৌচ করা। ডান পা দিয়ে বের হওয়। বের হয়ে দোয়া পাঠ করা। বের হয়ে সম্ভব হলে অজু করা।

ইস্তিঞ্জায় নিষেধ : কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ দিয়ে বসা এবং প্রবল বাতাসের দিকে, চন্দ্র-সূর্যের দিকে বা অপেক্ষাকৃত উচু জায়গার দিকে মুখ করে বসা নিষেধ। চলাচলের রাস্তায়, গোসলখানায়, গোরস্থানে, গর্তের ভিতরে বা ছায়াদার ফলবান গাছের নীচে ইস্তিঞ্জা করা নিষেধ। ইস্তিঞ্জায় বসে তিলাওয়া করা, মুখে জিকির-দুরূদ-দোয়া পাঠ, কথা বলা, সালাম দেয়া বা জবাব দেয়া, খাওয়া বা পান করা, লেখা-পড়া করা নিষেধ। কুরআনের আয়াত, আল্লাহর নাম, নবীজির নাম অংকিত টুপি, রুমাল ও আংটি নিয়ে ইস্তিঞ্জায় প্রবেশ নিষেধ। হাড়, কয়লা, কাগজ, কাঁচ, গাছের পাতা, খাদ্য-দ্রব্য, শুকনা গোবর, ব্যবহৃত ঢিলা কুলুখ হিসাবে ব্যবহার করা নিষেধ। বিনা ওজরে ডান হাতে শৌচ করা ও জমজমের পানিতে শৌচ করা নিষেধ। 

৫) ওজুর শুরুতে বিছমিল্লাহ... পাঠঃ হযরত রাবাহ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে আবু সুফিয়ান ইবনে হুআইতিব থেকে তার দাদীর সুত্রে, তিনি তার পিতার (সাইদ ইবনে যায়েদ) সুত্রে বর্ণনা করেন, তিনি (সাইদ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি : যে ব্যক্তি অজুর শুরুতে বিছমিল্লাহ ( بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ ) বলেনি, তার অজু হয়নি। -(বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী, নাসাই, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)

৬) ওজুর শেষে পাঠ করার দোয়াঃ ওজুর পর কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ : হযরত ওমর ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি ভালো করে ওযু করে এবং ওযুর পর কালিমায়ে শাহাদাত (আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লা-হু ওয়াহদাহু- লা- শারী-কালাহু- ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু-ওয়া রসূ-লুহূ) পড়ে- [অর্থাৎ- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন কোন ইলাহ নাই, তিন এক, তার কোন শরীক নাই। আমি  আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,  মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা এবং রাসূল।]- তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে। সে তখন যেটি দিয়ে খুশি সেটি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। -[বুখারী ও মুসলিম]

তিরমিযীর বর্ণনায়ঃ হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অজু করার পর বলে-

أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَه وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُوْلُه اَللّهُمَّ اجْعَلْنِيْ مِنَ التَّوَّابِيْنَ وَاجْعَلْنِيْ مِنَ الْمُتَطَهِّرِيْنَ

(আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তার কোন শরীক নাই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,মুহাম্মাদ (স) তার বান্দা ও রসূল। হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীগণের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং পবিত্রতা অর্জনকারী গণের অন্তর্ভুক্ত করুন)- তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হয়। সে ইচ্ছামত যে কোন দরজা দিয়েই প্রবেশ করতে পারবে। -(তিরমিযী)

অজুর আদব : অজুর জন্য নিয়ত করা, মিসওয়াক করা, বিছমিল্লাহ...পাঠ করা, দুই হাত কবজিসহ তিনবার ধোয়া, তিনবার কুলি করা, তিনবার নাকে পানি দেওয়া, সমস্ত মুখমন্ডল তিনবার ধোয়া, ঘন দাড়ি থাকলে খিলাল করা, ডান ও বাম হাতের কনুইসহ তিনবার ধোয়া, মাথা-দুই কান-গর্দান একবার মাছাহ্ করা, টাখনুসহ ডান ও বাম পা তিনবার ধোয়া, আংগুলী খিলাল করা এবং অজু শেষে কলেমা শাহাদাতসহ দোয়া পড়া।

৭) বাড়ী থেকে বের হওয়ার সময় পড়ার দোয়াঃ হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি তার বাড়ী থেকে বের হওয়ার সময় বলে :

بِسْمِ اللّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللّهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّهِ

(আল্লাহর নামে বের হলাম এবং আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। আল্লাহ ছাড়া অকল্যাণ রোধ বা কল্যাণ হাসিল করার শক্তি কারো নাই)- তাকে বলা হয় তোমাকে হেদায়াত দেয়া হয়েছে, যথেষ্ট দেয়া হয়েছে এবং হেফাজতের ব্যবস্থা করা হয়েছে আর শয়তান তার থেকে দুরে চলে যায়। (তিরমিযী, আবু দাউদ ও নাসাই) আবু দাউদ পরে আরও বৃদ্ধি করেছেন- শয়তান অন্য শয়তানকে বলে, তুমি এর উপর কেমন করে নিয়ন্ত্রন লাভ করবে যাকে হেদায়াত দান করা হয়েছে, যথেষ্ট দেয়া হয়েছে এবং হেফাজতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

৮) বাড়ীতে প্রবেশ করার সময় পড়ার দোয়াঃ হযরত আবু মালেক আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যখন কোন ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করে তখন সে যেন বলে-

بِسْمِ اللّهِ وَلَجْنَا وَبِسْمِ اللّهِ خَرَجْنَا وَعَلَى اللّهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا

(আমরা আল্লাহর নামে বাড়ীতে প্রবেশ করলাম, আল্লাহর নামে বাড়ী হতে বের হয়েছিলাম আর আমরা আমাদের প্রভু আল্লাহর উপর ভরসা রাখি)- অতঃপর ঘরের বাসিন্দাদেরকে সালাম করবে।  (আবু দাউদ)

ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার আদব : বের হওয়ার সময় ঘরের সবাইকে সালাম করা, দোয়া পড়া, বাম পা দিয়ে বের হওয়া, বাহিরে থাকাকালীন আল্লাহকে স্মরণ রাখা, রাস্তায় চলাকালীন পথের হক আদায় করা, চোখ ও জিহ্বার হিফাজত করা, বাহিরের কাজে সততা রক্ষা করা, সংশ্লিষ্ট সবার হক আদায় করা, সবার সাথে উত্তম ব্যবহার করা, ফিরে এসে ঘরে প্রবেশ কালীন ঘরের বাসিন্দাদের সালাম করা, অনুমতি গ্রহন করা, ডান পা দিয়ে প্রবেশ করা ও দোয়া পড়া। 

৯) মাসজিদে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার দোয়াঃ হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যখন তোমাদের কেহ মাসজিদে প্রবেশ করে তখন সে যেন বলে-

اَللّهُمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ

-(হে আল্লাহ! তুমি আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দাও) আর যখন মাসজিদ থেকে বের হবে তখন সে যেন বলে-

اَللّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ

(হে আল্লাহ! আমি তোমার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি)- মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসাই ও ইবনে মাজাহ।

মাসজিদের আদব: প্রবেশকালীণ বিছমিল্লাহ্....পাঠ করা, রসূলের (স) উপর দুরূদ পাঠ করা, প্রবেশের দোয়া পাঠ করা, ডান পা দিয়ে প্রবেশ করা, নফল ইতিকাফের নিয়ত করা, কাউকে জায়গা থেকে না সরিয়ে খালি জায়গায় বসে পড়া, ইবাদাত ও জিকিরে রত থাকা, তর্ক-বিতর্ক বা শোরগোল না করা, উচ্চস্বরে কথা-বার্তা না বলা, অন্যকে বসার সুযোগ করে দেওয়া, দোয়া পাঠ করে বের হওয়া, বাম পা দিয়ে বের হওয়া, ঢুকতে ও বের হতে ঠেলা-ধাক্কা না করা।

১০) আহারের শুরুতে পাঠ করার দোয়াঃ হযরত আইশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যখন তোমাদের কেউ আহার করে তখন শুরুতে যেন আল্লাহর নাম নেয়। (অর্থাৎ বলে)-

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ

আর শুরুতে আল্লাহর নাম নিতে ভুলে গেলে (স্মরণ হওয়া মাত্র) যেন বলে :

بِسْمِ اللّهِ أَوَّلَه وَآخِرَه

(প্রথম ও শেষে আল্লাহর নামে)- তিরমিযী : হাসান ও সহীহ এবং আবু দাউদ।

১১) আহারের সময় পাঠ করার দোয়াঃ হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহ তায়ালা কাউকে আহার করালে সে যেন বলে-

اَللّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيْهِ وَأَطْعِمْنَا خَيْرًا مِّنْهُ

(হে আল্লাহ! এ খাদ্যে আমাদেরকে বরকত দাও এবং আমাদেরকে এর চেয়ে উত্তম খাদ্য আহার করাও) আর আল্লাহ কাউকে দুধ পান করালে সে যেন বলে-

اَللّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيْهِ وَزِدْنَا مِنْهُ

(হে আল্লাহ আমাদেরকে এ দুধে বরকত দাও এবং আমাদেরকে এর চেয়ে অধিক দান কর) রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন : একই সাথে পান ও আহারের জন্য যথেষ্ট হওয়ার মত দুধের বিকল্প কোন খাদ্য নাই। -(তিরমিযী : হাসান, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)

১২) আহারের শেষে পাঠ করার দোয়াঃ হযরত আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন আহার শেষ করতেন বা কিছু পান করতেন তখন বলতেন-

اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِيْ أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا وَجَعَلَنَا مُسْلِمِيْنَ

(সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে আহার করিয়েছেন, পান করিয়েছেন ও মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন) -তিরমিযী: হাসান, আবুদাউদ।

অন্য বর্ণনায়ঃ হযরত মুয়ায ইবনে আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে তার পিতার সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি আহার শেষ করার পর বলে-

اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِيْ أَطْعَمَنِيْ هَذَا وَرَزَقَنِيْهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِّنّيْ وَلَا قُوَّةٍ

(সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে আহার করিয়েছেন, আমাকে রিজিক দিয়েছেন, আমার তা হাসিল করার প্রচেষ্টা বা শক্তি ছাড়াই)- তার পূর্বাপরের গুনাহসমূহ মার্জনা করে দেওয়া হয়।- আবুদাউদ ও তিরমিযী।

খাওয়ার আদব : ছুন্নাত তরিকায় বসা, দস্তরখান বিছানো, হাত ধৌত করা, বিছমিল্লাহ.. বলে শুরু করা, ডান হাতে খাওয়া, নিজের সামনে থেকে খাবার গ্রহন করা, একত্রে খেতে বসলে সাথীদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া, অন্যের প্লেটের দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে না তাকানো, ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া, মাঝে মাঝে আলহামদুলিল্লাহ বলা, কথা-বার্তা কম বলা, গল্প-গুজব-হাসি-ঠাট্টা না করা, মনে মনে আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামতের শুকুর করা, শেষে হাত ধোয়া ও দোয়া পাঠ করা।

১৩) বাজারে গিয়ে পাঠ করার দোয়াঃ হযরত সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সুত্রে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : যে লোক বাজারে গিয়ে বলে-

لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِيْ وَيُمِيْتُ وَهُوَ حَيٌّ لَّا يَمُوْتُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

(আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তার কোন শরীক নাই, তিনিই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী, সব প্রশংসা তারই জন্য, তিনিই জীবন ও মৃত্যু দান করেন, তিনি চিরঞ্জীব, কখনো মৃত্যুবরন করবেন না, সমস্ত কল্যাণ তারই হাতে এবং তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান)- আল্লাহ তার জন্য এক লক্ষ নেকী লিখেন, এক লক্ষ গুনাহ মাফ করেন এবং তার জন্য জান্নাতে একখানা ঘর তৈরী করেন। (তিরমিযী)

বাজারের আদব : বাজারে গিয়ে দোয়া পাঠ করা, সালাম দেওয়া ও সালামের জবাব দেওয়া, সবার সাথে উত্তম ব্যবহার করা, বেঁচা-কেনার মধ্যে সততা বজায় রাখা, মাপে কম-বেশী না করা, অন্যের দাম-দস্তুর করা অবস্থায় বাড়িয়ে দাম না বলা, মালামালে কোন ত্রটি থাকলে গোপন না করে তা প্রকাশ করে দেয়া, মূল্য ঠিক হয়ে যাওয়ার পর ২/১ টাকা কম-বেশী না করা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাজার থেকে ফিরে আসা।

১৪) সফরের শুরুতে ও ফিরে এসে পড়ার দোয়াঃ হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে রওনা হয়ে বাহনে আরোহন করে তিনবার তাকবীর বলতেন। অতঃপর বলতেন :

سُبْحَانَ الَّذِيْ سَخَّرَ لَنَا هذَا وَمَا كُنَّا لَه مُقْرِنِيْنَ وَإِنَّا إِلى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُوْنَ

(অতীব পবিত্র ও মহান তিনি, যিনি একে আমাদের নিয়ন্ত্রনাধীন করেছেন, অন্যথায় আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের কাছে ফিরে যাব) অতঃপর তিনি বলতেন :

اَللّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِيْ سَفَرِيْ هذَا مِنَ الْبِرِّ وَالتَّقْوى وَمِنَ الْعَمَلِ مَا تَرْضى اَللّهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا الْمَسِيْرَ وَاَطْوِ عَنَّا بُعْدَ الْأَرْضِ اَللّهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِي السَّفَرِ وَالْخَلِيْفَةُ فِي الْأَهْلِ اَللّهُمَّ اصْحَبْنَا فِيْ سَفَرِنَا وَاخْلُفْنَا فِيْ أَهْلِنَا

হে আল্লাহ! আমার এ সফরে আমি তোমার কাছে পূন্য, তাকওয়া এবং তোমার পছন্দনীয় কাজ করার তৌফিক প্রার্থনা করি। হে আল্লাহ! সফরটি আমাদের জন্য সহজতর করে দাও এবং পথের দূরত্ব আমাদের জন্য সংকুচিত করে দাও। হে আল্লাহ! সফরে তুমিই আমাদের সাথী এবং পরিবার-পরিজনে আমাদের প্রতিনিধি। হে আল্লাহ! এ সফরে তুমি আমাদের বন্ধু ও আমাদের পরিবার-পরিজনের তদারককারী হয়ে যাও) অতঃপর তিনি ফিরে এসে বলতেন :  
            
آيِبُوْنَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ

(ইনশাআল্লাহ! আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, ইবাদাতকারী এবং আমাদের প্রভুর প্রশংসাকারী)- তিরমিযী, মুসলিম, নাসাই ও আবু দাউদ।

অন্য বর্ণনায়ঃ হযরত আল-বারাআ ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর থেকে ফিরে এসে বলতেন :

آيِبُوْنَ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ

(আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, ইবাদাতকারী, আমাদের রবের প্রশংসাকারী)- তিরমিযী : হাসান ও সহীহ, আহমাদ।

১৫) কোন স্থানে যাত্রা বিরতীকালে দোয়াঃ হযরত খাওলা বিনতে হাকিম আস-সুলামিয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : কোন ব্যক্তি যখন কোন স্থানে অবতরণ করে বলে-

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ

(আমি আল্লাহর কাছে তার পরিপূর্ণ বাক্যের উসীলায় আশ্রয় প্রার্থনা করি, তার সমস্ত সৃষ্টির অনিষ্টতা থেকে)- সে উক্ত স্থান ত্যাগ করা পর্যন্ত কোন কিছুই তার ক্ষতি করতে পারে না। (তিরমিযী : হাসান ও সহীহ)

১৬) কোন সম্প্রদায় থেকে ক্ষতির আশংকা হলে দোয়াঃ হযরত আবু মুসা আল-আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোন সম্প্রদায় দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ  হওয়ার আশংকা করতেন তখন বলতেন :

اَللّهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِيْ نُحُوْرِهِمْ وَنَعُوْذُ بِكَ مِنْ شُرُوْرِهِمْ

(হে আল্লাহ! আমরা তোমাকেই তাদের মুখোমুখী করছি এবং তাদের অনিষ্টতা থেকে তোমারই কাছে আশ্রয় চাচ্ছি)- আবু দাউদ ও নাসাই।

১৭) উঁচুতে উঠতে ও নীচে নামতে দোয়াঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার বাহিনী যখন উচুঁ ভূমিতে উঠতেন তখন اَللّهُ اَكْبَرُ বলতেন এবং নীচের দিকে নামতেন তখন سُبْحَانَ اللّهِ   বলতেন।- বুখারী, তিরমিযী ও  আবু দাউদ।

১৮) উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দোয়াঃ হযরত উসামা ইবনে যায়েদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তির কিছু উপকার করা হয় এবং এর জবাবে সে বলে-

جَزَاكَ اللّهُ خَيْرًا

(অর্থাৎ- আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন), সে পুরোপুরি তার প্রশংসা ও বিনিময় দান করল। (তিরমিযী)

১৯) বিপদগ্রস্থ বা রোগাগ্রস্থ ব্যক্তিকে দেখে দোয়াঃ আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি কোন বিপদগ্রস্থ বা ব্যাধিগ্রস্থ লোককে দেখে বলে-

اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِيْ عَافَانِيْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِه وَفَضَّلَنِيْ عَلى كَثِيْرٍ مِّمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيْلًا

(সমস্ত প্রসংসা আল্লাহর জন্য যিনি তোমাকে যে ব্যাধিতে আক্রান্ত করেছেন তা থেকে আমাকে নিরাপদে রেখেছেন এবং তার বহু সংখ্যক সৃষ্টির উপর আমাকে মর্যাদা দান করেছেন)- সে কখনো উক্ত বিপদ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হবে না। -তিরমিযী : হাসান।

২০) শরীরে যে কোন ব্যথা অনুভব করলে পড়ার দোয়াঃ হযরত আবু আব্দুল্লাহ উসমান ইবনে আবুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি নিজের শরীরে যে ব্যথা অনুভব করছিলেন সে সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অভিযোগ করেন। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন : তোমার শরীরে যে স্থানে ব্যথা হচ্ছে সেখানে তোমার ডান হাত রাখ এবং তিনবার বিসমিল্লাহ পড়, তারপর সাতবার এ দোয়াটি পড়-

أَعُوْذُ بِعِزَّةِ اللّهِ وَقُدْرَتِه مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ

(আমি আল্লাহর মর্যাদা ও কুদরতের মাধ্যমে আশ্রয় চাচ্ছি সেই জিনিষের অনিষ্টতা থেকে, যা আমি অনুভব করছি এরং যার আধিক্যকে আমি ভয় করি)- ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা, আবু দাউদ, তিরমিযী ও আহমাদ।

২১) রোগীর জন্য ঝাড়-ফুঁকের দোয়াঃ হযরত আইশা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের পরিবারের কোন রোগীকে দেখতে গেলে তার শরীরের উপর ডান হাত বুলাতেন এবং বলতেন :

اللّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَأْسِ اِشْفِ أَنْتَ الشَّافِيْ لَا شَافِيَ إِلَّا أَنْتَ شِفَاءً لَّا يُغَادِرُ سَقَمًا

(হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রভু! বিপদ দুরীভূত কর, রোগ মুক্তি দান কর, তুমিই রোগমুক্তি দানকারী, তুমি ছাড়া রোগ থেকে মুক্তি দান করার আর কেহ নাই, এমন রোগ মুক্তি যার পরে আর কোন রোগ থাকে না)- বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ ও আহমাদ।

২২) রোগীকে দেখতে যেয়ে রোগীর জন্য পড়ার দোয়াঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি এমন কোন ব্যক্তিকে দেখতে যায়, যার মৃত্যু নিকটবর্তী নয় (বলে মনে হয়), অতঃপর তার কাছে সাতবার বলে-

أَسْأَلُ اللّهَ الْعَظِيْمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ أَنْ يَّشْفِيَكَ

(বিশাল আরশের প্রভু মহান আল্লাহর কাছে আমি প্রার্থনা করছি, তিনি তোমাকে রোগ মুক্তি দান করুন), তবে আল্লাহ তাকে সেই রোগ থেকে মুক্তি দান করেন। -আবু দাউদ, তিরমিযী ও হাকেম।

২৩) বিপদে অস্থির হলে পাঠ করার দোয়াঃ হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : তোমাদের কেউ যেন বিপদে পতিত হয়ে মৃত্যু কামনা না করে। সে যদি একান্ত বাধ্য হয়ে কিছু বলতে চায় তাহলে যেন (এরূপ) বলে-

اَللَّهُمَّ أَحْيِنِيْ مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِّيْ وَتَوَفَّنِيْ إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِّيْ

(হে আল্লাহ! আমাকে ঐ সময় পর্যন্ত জীবিত রাখুন, যতক্ষন আমার জীবন আমার জন্য কল্যাণকর হয় আর আমাকে মৃত্যু দান করুন যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয়)- বুখারী, মুসলিম ও তিরমিযী।

২৪) মৃত্যু পথযাত্রীকে তালকীনঃ হযরত আবু সাইদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : তোমরা মৃত্যু পথযাত্রীকে لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ   - এর তালকীন কর -(মুসলিম)

অন্য বর্ণনায়ঃ হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তির শেষ কথা হয় لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ - সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। -আবু দাউদ ও হাকেম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

২৫) মুসিবতের সময় পাঠ করার দোয়াঃ হযরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি : কোন ব্যক্তির উপর কোন বিপদ এলে যদি সে বলে-

إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ - اَللّهُمَّ أَجِرْنِيْ فِيْ مُصِيْبَتِيْ وَأَخْلُفْ لِيْ خَيْرًا مِّنْهَا

(আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমাদেরকে তারই দিকে ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ! বিপদে আমাকে সওয়াব দান করুন এবং যা হারিয়েছি তার বদলে তার চাইতে ভাল বস্তু দান করুন)- মহান আল্লাহ তাকে তার বিপদের প্রতিদান দেন এবং সে যা কিছু হারিয়েছে তার বদলে তার চাইতে উত্তম বস্তু দেন। -(সহীহ মুসলিম)

২৬) কবর জিয়ারতের দোয়াঃ হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনার কবর স্থানের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি কবরবাসীদের দিকে মুখ করে বললেন :

اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْقُبُوْرِ يَغْفِرُ اللّهُ لَنَا وَلَكُمْ أَنْتُمْ سَلَفُنَا وَنَحْنُ بِالْأَثَرِ

(হে কবরের অধিবাসীগণ! তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আমাদেরকে ও তোমাদেরকে ক্ষমা করুন। তোমরা তো আমাদের পূর্বসূরী আর আমরা তোমাদের উত্তরসুরী)- তিরমিযী: হাসান

২৭) বিপদের সময় পাঠ করার দোয়াঃ হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিপদের সময় দোয়া করতেন :

لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ الْحَلِيْمُ الْحَكِيْمُ لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمُ لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ رَبُّ السَّموَاتِ وَالْأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيْمُ

- (আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তিনি পরম সহিষ্ণু ও মহা জ্ঞানী। আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তিনি মহান আরশের প্রভু।  আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তিনি আকাশমন্ডলী, জমীন ও মহাসম্মানিত আরশের প্রভু)- বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, নাসাই ও ইবনে মাজাহ।

২৮) হাঁচি সংশ্লিষ্ট পাঠ করার দোয়া সমূহঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তোমাদের কেহ হাঁচি দিলে বলবে-   اَلْحَمْدُ لِلّهِ (সমস্ত প্রসংশা আল্লাহর জন্য)  অতঃপর তার সাথী শুনে বলবে- يَرْحَمُكَ اللّهُ (তোমার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক) তঃপর যার জন্য বলা হল সে যেন বলে- يَهْدِيْكُمُ اللّهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ   (আল্লাহ তোমাদের হিদায়াত দান করুন এবং তোমাদের অবস্থার সংশোধন করুন) -বুখারী, মুসলিম ও তিরমিযী : হাসান ও সহীহ।

২৯) নতুন চাঁদ দেখে পড়ার দোয়াঃ হযরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নতুন চাঁদ দেখে বলতেন :

 اَللّهُمَّ أَهْلِلْهُ عَلَيْنَا بِالْيُمْنِ وَالْإِيْمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالْإِسْلَامِ رَبِّيْ وَرَبُّكَ اللّهُ

(হে আল্লাহ! চাঁদটিকে আমাদের জন্য বরকতময় (নিরাপদ), ঈমান, নিরাপত্তা ও শান্তির বাহন করে উদিত কর। হে নবচাঁদ! আল্লাহ আমারও প্রভু তোমারও প্রভু) - তিরমিযী : হাসান, আহমাদ, হাকেম ও দারেকুতনী।

৩০) নতুন কাপড় পরিধানের দোয়াঃ হযরত মুয়াজ ইবনে আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরিধান করে সে যেন বলে-

    اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِيْ كَسَانِيْ هذَا الثَّوْبَ وَرَزَقَنِيْهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِّنِّي وَلَا قُوَّةٍ

(যাবতীয় প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে এই পোষাক পরিধান করিয়েছেন এবং আমার শক্তি সামর্থ্য ব্যতীতই তিনি তা আমাকে দান করেছেন), তাহলে তার পূর্বাপরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া  হবে। (তিরমিযী ও আবু দাউদ)

৩১) স্থলপথে বাহনে আরোহণকালে পাঠ করার দোয়াঃ হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে রওনা হয়ে বাহনে আরোহণ করে তিনবার তাকবীর বলতেন। অতঃপর বলতেন :

سُبْحَانَ الَّذِيْ سَخَّرَ لَنَا هذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِيْنَ وَإِنَّا إِلى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُوْن

(অতীব পবিত্র ও মহান তিনি, যিনি একে আমাদের নিয়ন্ত্রনাধীন করেছেন, অন্যথায় আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের কাছে ফিরে যাব)

৩২) জলপথে বাহনে আরোহণকালে দোয়াঃ হযরত নুহ আলাইহিস্সালাম মহাপ্লাবনের সময় জাহাজে আরোহণকালে এই দোয়া পড়েছিলেন :

بِسْمِ اللّهِ مَجْرهَا وَمُرْسَاهَا إِنَّ رَبِّيْ لَغَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

(আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি, নিশ্চয়ই আমার প্রভু ক্ষমাশীল ও দয়াময়)
৩৩) লাইলাতুল কদরে পাঠ করার দোয়াঃ হযরত আইশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি যদি লাইলাতুল কদর পাই তাহলে সে রাতে কি বলব? তিনি বললেন : তুমি বল-

اَللّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ

(হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাকারী, ক্ষমা করাই পছন্দ কর, অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও) - ইবনে মাজাহ, আহমাদ, তিরমিযী ও হাকেম।

৩৪) ক্রোধের উদ্রেক হলে দোয়াঃ হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দুই ব্যক্তি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সামনে পরস্পরকে ঝগড়া করে। এমনকি তাদের একজনের চেহারায় ক্রোধের ছাপ ফুটে উঠে। তখন নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- নিশ্চয়ই আমি এমন একটি বাক্য অবহিত আছি, যদি এ লোকটি তা উচ্চারন করত তবে অবশ্যই তার ক্রোধ চলে যেত। তা হল-

أَعُوْذُ بِاللّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ

(আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই)- তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসাই ও মুসনাদে আহমাদ।

৩৫) দেনা থেকে মুক্তির দোয়াঃ হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। একটি চুক্তিবদ্ধ দাস তার কাছে এসে বলে, আমি আমার চুক্তির অর্থ পরিশোধে অপারগ হয়ে পড়েছি। আপনি আমাকে সাহায্য করুন। তিনি বলেন, আমি তোমাকে এমন একটি বাক্য শিখিয়ে দিব যা আমাকে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিখিয়েছিলেন? যদি তোমার উপর সীর (সাবীর) পর্বত পরিমান দেনাও থাকে তবে আল্লাহ তায়ালা তোমাকে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিবেন। তিনি বলেন, তুমি বল :

اَللّهُمَّ اكْفِنِيْ بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَأَغْنِنِيْ بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ

(হে আল্লাহ! তোমার হালাল দ্বারা আমাকে তোমার হারাম থেকে দুরে রাখ এবং তোমার দয়ায় তুমি ভিন্ন অপরের মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে স্বনির্ভর কর)- তিরমিযী : হাসান, বায়হাকী, হাকেম।

৩৬) বিদায়দান কালে পঠিত দোয়াঃ হযরত সালিম (রহ.) থেকে বর্ণিত। কোন ব্যক্তি সফরে রওনা হলে ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে বলতেন- আমার নিকবর্তী হও, আমি তোমাকে বিদায় সম্ভাষন জানাবো, যেভাবে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বিদায় সম্ভাষন জানাতেন। তিনি বলতেন :

أَسْتَوْدِعُ اللّهَ دِينَكَ وَأَمَانَتَكَ وَخَوَاتِيْمَ عَمَلِكَ

(আমি তোমার দ্বীন, ঈমান ও সর্বশেষ আমলের ব্যাপারে আল্লাহকে যামিনদার নিযুক্ত করলাম) -তিরমিযী : হাসান ও সহীহ, আবু দাউদ ও নাসাই।

৩৭) দোয়া ইউনুস এবং এর ফজিলতঃ হযরত সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহর নবী যুন-নুন (ইউনুস আলাইহিসসালাম) মাছের পেটে অবস্থান কালে যে দোয়া করেছিলেন তা হল :

لَا إِلهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ

(তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তুমি পবিত্র, নিশ্চয়ই আমি জালেমদের অন্তর্ভুক্ত) কোন মুসলিম ব্যক্তি কোন বিষয়ে এ দোয়া করলে আল্লাহ অবশ্যই তা কবুল করেন। (তিরমিযী : হাসান ও নাসাই)

৩৮) মাজলিস শেষে পাঠ করার দোয়াঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি মাজলিসে বসে অনেক অনর্থক কথাবার্তা বলেছে, অতঃপর মাজলিস থেকে উঠে যাওয়ার পূর্বে এই দোয়া পড়ে-

سُبْحَانَكَ اللّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلهَ إِلَّا أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوْبُ إِلَيْكَ

(হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র, সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য। আমি সাক্ষ্য দেই যে, তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তোমার নিকট তওবা করি) -তাহলে উক্ত মাজলিসে সে যা কিছু বলেছে তা মাফ করে দেয়া হবে। (তিরমিযী,আবু দাউদ, নাসাই, বায়হাকী ও হাকেম)

৩৯) দ্বীনের উপর অবিচল থাকার দোয়াঃ হযরত শাহর ইবনে হাওশাব (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে উম্মুল মুমিনীন! রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আপনার কাছে অবস্থান করতেন তখন অধিকাংশ সময়ে তিনি কি দোয়া করতেন? তিনি বলেন, বেশীর ভাগ সময়ে তিনি এই দোয়া করতেন :

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِيْ عَلى دِيْنِكَ

(অর্থাৎ- হে অন্তর সমুহের ওলট-পালটকারী! আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের উপর অবিচল রাখুন) - তিরমিযী : হাসান।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোয়া করতেন :

اَللّهُمَّ مُصَرِّفَ الْقُلُوْبِ صَرِّفْ قُلُوْبَنَا عَلى طَاعَتِكَ

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! হৃদয় সমূহের পরিবর্তন কারী, আমাদের হৃদয়গুলোকে আপনার আনুগত্যের দিকে ঘুরিয়ে দিন) - মুসলিম।

৪০) কুরআনের ন্যায় গুরুত্ব দিয়ে শেখানো দোয়াঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দোয়াটি তাদের এভাবে শিক্ষা দিতেন যেভাবে কুরআনের কোন সূরা তাদের শিক্ষা দিতেন :

اَللّهُمَّ إِنّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই জাহান্নামের আযাব থেকে ও কবরের আযাব থেকে। আমি আপনার নিকট আরো আশ্রয় চাই মসীহ দাজ্জালের বিপর্যয় থেকে। আমি আপনার নিকট আরো আশ্রয় চাই জীবন ও মৃত্যুর বিপর্যয় থেকে।) - মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ ও নাসাই।

৪১) ফজরবাদ পাঠ করার বিশেষ দোয়াঃ হযরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর দুই পা ভাজ অবস্থায় কারো সাথে কথা বলার পূর্বে দশ বার বলে-

لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِيْ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

(অর্থাৎ - আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তার কোন শরীক নাই, সার্বভৌমত্ব তারই, সব প্রশংসা তারই জন্য, তিনিই জীবন ও মৃত্যু দান করেন আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান), তার আমল নামায় দশটি নেকী লেখা হয়, দশটি গুনাহ বিলুপ্ত করা হয় এবং দশগুন মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। সে ঐ দিন সব রকমের বিপদ থেকে মুক্ত থাকবে, শয়তানের ধোঁকা থেকে তাকে পাহারা দেয়া হবে এবং ঐ দিন র্শিক ছাড়া অন্য কোন গুনাহ তাকে ক্ষতিগ্রস্থ  করতে পারবে না। - তিরমিযী : হাসান ও সহীহ।

৪২) তিলাওয়াতে সিজদায় পাঠ করার দোয়াঃ হযরত আইশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করার পর সিজদায় বলতেন:

سَجَدَ وَجْهِيَ لِلَّذِيْ خَلَقَه وَشَقَّ سَمْعَه وَبَصَرَه بِحَوْلِه وَقُوَّتِه

(অর্থাৎ- আমার মুখমন্ডল সেই মহান সত্তাকে সিজদা করল, যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং নিজের প্রবল ক্ষমতায় তার মধ্যে শ্রবন শক্তি ও দৃষ্টি দান করেছেন) - তিরমিযী : হাসান ও সহীহ।

৪৩) তওবা ও ইস্তিগফারের দোয়াঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি বলে-

أَسْتَغْفِرُ اللّهَ الَّذِيْ لَا إِلهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ

(অর্থাৎ - আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি আল্লাহর কাছে যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নাই, যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী এবং আমি তার কাছে তওবা করছি), তার গোনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয়, এমনকি তা জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করার মত গোনাহ হলেও। - (তিরমিযী : হাসান ও সহীহ)

৪৪) বজ্রধ্বনি শুনে পড়ার দোয়াঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বজ্র ধ্বনি ও মেঘের গর্জন শুনলে বলতেন :

اَللّهُمَّ لَا تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ وَلَا تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ

(হে আল্লাহ! তোমার গজব দ্বারা আমাদেরকে ধ্বংস করো না, তোমার আজাব দ্বারা আমাদেরকে ধ্বংস করো না বরং তার আগেই আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও)- তিরমিযী, আহমাদ ও হাকেম।

৪৫) প্রবল বেগে বায়ু প্রবাহের সময়ে দোয়াঃ হযরত আইশা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবল বেগে বায়ু প্রবাহিত হতে দেখলে বলতেন :

اَللّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهَا وَخَيْرِ مَا فِيهَا وَخَيْرِ مَا أُرْسِلَتْ بِه وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيهَا وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِه

(অর্থাৎ - হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে এ বাতাসের কল্যাণ, এর মধ্যে নিহিত কল্যাণ এবং যে কল্যাণ সহ এটা প্রেরিত হয়েছে তা প্রার্থনা করি। আর এর অনিষ্টতা, এর মধ্যে নিহিত অনিষ্ট এবং যে অনিষ্ট সহ এটা প্রেরিত হয়েছে তা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি) - তিরমিযী : হাসান।

৪৬) খারাপ স্বপ্ন দেখলে পাঠ করার দোয়াঃ হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন : তোমাদের কেউ তার পছন্দনীয় স্বপ্ন দেখে থাকলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। অতএব সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে এবং সে যা দেখেছে তা অন্যের কাছে ব্যক্ত করে। আর এর বিপরীত খারাপ স্বপ্ন দেখলে তা শয়তানের তরফ থেকে। অতএব সে যেন এর ক্ষতি থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে এবং সে যা দেখেছে তা অন্যের কাছে ব্যক্ত না করে। তা হলে তার কোন ক্ষতি হবে না। -তিরমিযী : হাসান ও সহীহ, বুখারী ও নাসাই)

প্রশংসার দোয়া : اَلْحَمْدُ لِلّهِ  (সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য) আর আশ্রয় প্রার্থনার দোয়া :
أَعُوْذُ بِاللّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (আমি মরদুদ শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই)

৪৭) শয়তান থেকে সন্তানের হিফাজতঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : তোমাদের কেউ যখন তার স্ত্রীর কাছে আসে, তখন তার নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়া উচিৎ -

بِسْمِ اللّهِ اَللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا

(অর্থাৎ - আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ! শয়তান থেকে আমাদের দুরে রাখ এবং শয়তানকে তার থেকেও দুরে রাখ যা আমাদেরকে দান করা হবে) এই মিলনের ফলে যদি কোন সন্তান জন্ম নেয় তাহলে শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারে না। -(বুখারী, মুসলিম ও তিরমিযী : হাসান ও সহীহ্)

৪৮) আশ্রয় প্রার্থনার দোয়াঃ হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করে বলতেন :

اَللّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَفِتْنَةِ الْمَسِيحِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ

(অর্থাৎ - হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রর্থনা করি অলসতা, বার্ধক্য, কাপুরুষতা, কৃপনতা, মাসীহ দাজ্জালের বিপর্যয় এবং কবরের আযাব থেকে)-তিরমিযী : হাসান ও সহীহ।

৪৯) নামাজের মধ্যে পড়ার দোয়াঃ হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন একটি দোয়া শিখিয়ে দিন যা আমি নামাজের মধ্যে পড়তে পারি। তিনি বললেন : তুমি বল-

اَللّهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمًا كَثِيْرًا وَّلَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِيْ إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ

(আমি আমার সত্তার উপর অনেক জুলুম করেছি। আপনি ছাড়া গোনাহ মাফ করার আর কেউ নাই। অতএব আপনি আমাকে মাফ করে দিন, কেননা আপনিই কেবল মাফ করতে পারেন। আর আমার প্রতি দয়া করুন, নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু) - বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী ও নাসায়ী।

৫০) বেশী বেশী পাঠ করার দোয়াঃ হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় এই দোয়া করতেন :

اللّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ

৫১) ইসমে আজমঃ হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহর মহান নাম (ইসমে আজম) এই দুই আয়াতের মধ্যে নিহিত আছে।

وَإلَهُكُمْ إِلهٌ وَّاحِدٌ لَا إِلهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمنُ الرَّحِيْمُ

আর তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তিনি দয়াময়  অতি দয়ালু। (বাকারাহ : ১৬৩) ও আলে-ইমরানের প্রারম্ভিক আয়াত :

الم اَللّهُ لَا إِلهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ

আলিফ লা-ম মী-ম। তিনি আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী। (আলে ইমরান : ১ -২)- তিরমিযী : হাসান ও সহীহ।

৫২) হিদায়াত কামনা করে দোয়াঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দোয়া করতেন :

اَللّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدى وَالتُّقى وَالْعَفَافَ وَالْغِنى

(হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট হিদায়াত, তাকওয়া, চরিত্রের নির্মলতা ও আত্মনির্ভরশীলতা প্রার্থনা করি)- তিরমিযী, মুসলিম ও ইবনে মাজাহ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার দ্বীনের খেদমতের জন্য কবুল করুন! রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম)-গনের আদর্শের উপর সর্বদা কায়েম রাখুন! এবং তাঁদের জামাআতের সংগে আমাদের হাশর করুন! আ-মী-ন।



5 comments:

  1. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  2. আসসালামু'আলাইকুম। ভাইয়া, আপনি যে দুয়াগুলি উপস্থাপন করেছেন তা আমাদের জিবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়। আপনার লেখা আরবী গুলো পরতে আমার একটু সমস্যা হচ্ছে যেমন, اَللّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدى وَالتُّقى وَالْعَفَافَ وَالْغِنى এই দুয়ার মধ্যে الْهُدى এইখানে বুঝতে পারছি না। এরকম আরো কয়েক যায়গাতে আছে। অনুগ্রহ করে এগুলো সংশোধন করে দিলে উপকৃত হব।

    ReplyDelete
  3. জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল সাঃ প্রদর্শিত পথ অনুযায়ী চলার তৌফিক দান করুন।

    ReplyDelete
  4. জাযাকাল্লাহু খাইর

    ReplyDelete