মুসলমানদের
মাঝে যারা রসূলূল্লাহর উম্মাতভূক্ত বলে গণ্য নয়
ডাঃ
গাজী মোঃ নজরুল ইসলাম
সমস্ত প্রশংসা
আল্লাহ তা'য়ালার জন্য যিনি রব্বুল আলামীন। দুরুদ ও সালাম
রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি যিনি রহমাতুল্লিল আলামীন, তাঁর পরিবারবর্গ, সাহাবায়ে কিরাম (রাদিয়াল্লাহু
আনহুম) এবং সালেহীন (র)-গণের প্রতি। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই। আমরা আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (স) তাঁর বান্দাহ ও রসূল। নিশ্চয়ই শুভ
পরিণতি শুধুমাত্র মুত্তাকীনদের জন্য নির্ধারিত।
মানব সভ্যতার
বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসারী
মুসলিম হিসাবে অসংখ্য দাবীদার রয়েছে। এর মধ্যে এমন অনেক মুসলমান রয়েছে, যারা
দুনিয়ার জীবনে মুসলিম হিসাবে দাবী করলেও মহান আল্লাহ তা'য়ালার দরবারে
তারা মুসলিম হিসাবে বা রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসারী হিসাবে
গণ্য নয়। আর হাশরের ময়দানে তারা রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
উম্মাতভূক্ত হবে না, বরং অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ভূক্ত হয়ে তাদেরকে হাশরের
ময়দানে আল্লাহর দরবারে হাজির করা হবে। মুসলিম উম্মাহর সতর্কতার জন্য বর্তমান প্রবন্ধে
এর কতিপয় দিক সকলের বিবেচনার জন্য তুলে ধরা হল।
যারা শয়তানের দলভূক্তঃ মহান
আল্লাহ তা'য়ালা
বলেন : (হে রাসূল!) আপনি কি তাদেরকে লক্ষ্য করেননি, যারা এমন লোকদের সাথে বন্ধুত্ব করে যাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলা ক্রোধান্বিত? তারা আপনাদের দলভুক্ত নয়, তারা তাদেরও দলভুক্ত নয়। তারা জেনে শুনে মিথ্যা শপথ করে। আল্লাহ তাদের
জন্য ভয়ানক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। তারা যা করে নিশ্চিতভাবে তা কতই না
মন্দকাজ! তারা তাদের শপথগুলোকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এবং এর দ্বারা তারা মানুষকে
আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখে। কাজেই তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাপ্রদ শাস্তি। আল্লাহর শাস্তির
মোকাবেলায় তাদের অর্থ-সম্পদ এবং তাদের সন্তান-সন্ততি কোনই কাজে আসবে না। তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। যেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে আবার জীবিত করবেন,
সেদিন তারা আল্লাহর নিকটও তেমন শপথ করবে, যেমন
শপথ তারা তোমাদের নিকট করেছে। তারা ধারণা করে যে, এমন শপথে কিছু
কাজ হবে। সাবধান! তারা তো অবশ্যই মিথ্যাবাদী। শয়তান তাদের উপর পুরোপুরি দখল
বিস্তার করেছে, সে তাদেরকে আল্লাহর যিকর করা ভুলিয়ে দিয়েছে।
তারাই শয়তানের দল। সাবধান! নিশ্চয় শয়তানের দল অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যারা আল্লাহ
ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে নিশ্চয় তারা চরম লাঞ্ছিতদের দলভুক্ত হবে। -(সুরা
মুজাদালা : ১৪-২০)
যারা অন্য জাতির
কালচারের সাথে সামঞ্জস্য রাখেঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে সামঞ্জস্য বা মিল রাখে, সে তাদেরই দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর
তাদের সাথেই হবে।” -(মুসনাদে আহমদ)
হযরত আবু উমামা
বাহেলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া-সাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের কৃষ্টি-কালচারের
অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত গণ্য হবে এবং যে ব্যক্তি
যে সম্প্রদায়কে মহব্বত করবে, তাদের সাথে তার হাশর হবে।”
-(সুনানে আবু দাউদঃ হাদীস নং ৩৫১৪)
যারা জালিম
শাসকদের সাথে আঁতাত করেঃ হযরত কাব বিন উজরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ " জেনে রাখো অচিরেই অনেক জালিম শাসক আসবে। যারা সেই সকল শাসকদের সাথে আঁতাত
করবে, তাদের অন্যায়গুলোকে সমর্থন দিবে এবং তাদের জুলুমে
সহযোগিতা করবে সে আমার উম্মত নয় এবং আমিও তাঁদের দায়িত্ব নিবো না এবং (কিয়ামতের দিন) তাকে আমার হাউজে কাউসারের সামনে আসতে
দেয়া হবে না। আর যাঁরা সেই সকল জালিম শাসকদের সাথে আঁতাত করবে না, তাদের জুলুমে সহায়তা করবে না তাঁরা আমার উম্মত এবং আমি তাঁদের দায়িত্ব
নিবো এবং তাঁদেরকেই (কিয়ামতের দিন) হাউজে কাউসারের
পানি পান করানো হবে। " -[ তিরমিযি, হাদিস নং ৬১৪,
হাদীস সহিহ]
যারা অন্য জাতির
সাথে বন্ধুত্ব করেঃ মহান আল্লাহ তা'য়ালা বলেন : হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে
বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা এক অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যারাই তাদেরকে
বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ
(এসব) জালিম সম্প্রদায়কে সুপথে পরিচালিত করেন না। বস্তুতঃ যাদের অন্তরে ব্যাধি
রয়েছে, তাদেরকে আপনি দেখতে পাবেন যে, দৌড়ে গিয়ে
তাদেরই মধ্যে প্রবেশ করে এবং তারা বলে, আমরা আশংকা করি যে,
আমাদেরকে কোন বিপদ এসে আক্রমন করে নাকি। অতএব সেদিন বেশী দুরে নয়,
যেদিন আল্লাহ বিজয় প্রকাশ করবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ
দিবেন, ফলে সেদিন তারা স্বীয় মনোভাবের জন্য অনুতপ্ত হবে।
মুমীনগণ বলবে- এরা কি সেই সব লোক, যারা আল্লাহর নামে
প্রতিজ্ঞা করে বলত যে আমরা তোমাদের সাথে আছি! তাদের কর্মফল বিফল হয়ে গেছে, ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্থ। -(সূরা মায়েদা : ৫১-৫৩)
হযরত ইবনে মাসঊদ
(রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে আলাহর
রসূল! এক ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়কে ভালবাসে কিন্তু তাদের সাথে মিলিত হতে পারছে না,
এ ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি কি বলেন ? রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : যে ব্যক্তি যাকে ভালবাসে (পরকালে) সে তার
সাথেই থাকবে। - (বুখারী ও মুসলিম)
যারা সমাজের
মানবীয় মূল্যবোধ রক্ষার মৌলিক দায়-দায়িত্ব পালন করে নাঃ হযরত আব্বাস
(রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি ছোটদেরকে স্নেহ করে না, বড়দের প্রতি
সম্মান প্রদর্শন করে না, ভালো কাজের আদেশ করে না, মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে না, সে আমার উম্মত নয়।
-[তিরমিযী, মিশকাত-৪৭৫৩]
যারা মানব সমাজে
প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মানুষকে ধোকা দেয়ঃ ধোঁকাহযরত আবু
হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি দোকানের খাদ্যের
স্তুপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন তিনি স্তুপের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে হাত বের করে
দেখলেন তার হাতের আঙ্গুল গুলো ভেজা। তখন তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন- এ অবস্থা কেন ?
উত্তরে সে বলল, এ গুলো বৃষ্টিতে ভিজে গেছে।
তখন তিনি তাকে বললেন- তাহলে তুমি এগুলোকে উপরে রাখলে না কেন? যাতে লোকেরা দেখতে পেত। মনে রাখবে- যে ধোঁকা দেয়, সে
আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। -[সহীহ মুসলিম: হাদীস নং ১০৬]
কিয়ামতের দিন
আল্লাহ যাদের বিরুদ্ধে দাড়াবেনঃ হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে
বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, কিয়ামতের দিন আমি ৩ ব্যক্তির বিরোধী থাকব । তাদের এক ব্যক্তি হল যে আমার
নামে প্রতিজ্ঞা করল তারপর তা ভঙ্গ করল । আরেক ব্যক্তি যে আযাদ মানুষ বিক্রি করে
তার মুল্য ভোগ করে । অপর এক ব্যক্তি হল যে কোন লোককে মজদুর নিয়োগ করল, এবং তার থেকে কাজ পুরোপুরি আদায় করল , অথচ তার
পারিশ্রমিক দিল না। -[সহীহ বুখারিঃ হাদীস নং ২১২৬]
পরকালে যারা আল্লাহর
রোষাণলে থাকবেঃ হযরত আবু যার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্র্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : কিয়ামাতের দিন তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ কথা বলবেন না, তাদের প্রতি তাকিয়েও দেখবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন
না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তিনি এ কথাটি
পুনঃ পুনঃ তিনবার বললেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্থ হবে, তারা কারা? তিনি বললেন : তারা হল- যে ব্যক্তি টাখনুর
নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরে, যে ব্যক্তি দান করার পর ‘দিয়েছি দিয়েছি’ বলে প্রচার করে বেড়ায় এবং যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করে তার পণ্যদ্রব্য বিক্রয়
করে। - (সহীহ মুসলিম)
যারা কুরআন থেকে
গাফেল- সুললিত কন্ঠে কুরআন পাঠ করে নাঃ হযরত
আবু লুবাবা বশীর ইবনে আব্দুল মুনজির (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি সুললিত কন্ঠে কুরআন পাঠ করে না, সে
আমাদের দলভূক্ত নয়। -(সুনানে আবু দাউদ : সহীহ)
আল্লাহ তা’য়ালা
বলেন : “আর যে আমার জিকির (কুরআন) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার
জীবিকা সংকীর্ণ করা হবে এবং আমি কিয়ামতের দিন তাকে অন্ধ করে উঠাব। সে বলবে,
হে আমার রব! আমাকে কেন অন্ধ করে উঠালেন, আমিতো (দুনিয়ায়) চুষ্মান
ছিলাম। তিনি (আল্লাহ) বলবেন : যেমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াত সমূহ এসেছিল, অতঃপর তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে, তেমনিভাবে আজ তোমাকেও ভুলে
যাওয়া হবে।” -(সূরা ত্ব-হা : ১২৪-১২৬)
যারা জীবনের সকল
ক্ষেত্রে সুন্নাতের প্রতি আগ্রহ রাখে নাঃ হযরত আবদুল্লাহ
ইবনে আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার পিতা একজন কুরাইশি মেয়ের সাথে আমাকে বিয়ে করিয়ে দিলেন। উক্ত মেয়ে
আমার ঘরে আসল। আমি নামায রোযা ইত্যাদি এবাদতের প্রতি আমার বিশেষ আসক্তির দরুণ তার
প্রতি কোন প্রকার মনোযোগ দিলাম না। একদিন আমার পিতা- আমর ইবনে আস (রাদিয়াল্লাহু
আনহু) তার পুত্রবধুর কাছে এসে জিজ্ঞাসা
করলেন, তোমার স্বামীকে কেমন পেয়েছ? সে
জবাব দিল, খুবই ভালো লোক অথবা বললো খুবই ভালো স্বামী। সে
আমার মনের কোন খোঁজ নেয় না এবং আমার বিছানার কাছেও আসে না। এটা শুনে তিনি আমাকে
খুবই গালাগাল দিলেন ও কঠোর কথা বললেন এবং বললেন, আমি তোমাকে
একজন কুরাইশি উচ্চ বংশীয়া মেয়ে বিয়ে করিয়েছি আর তুমি তাকে এরূপ ঝুলিয়ে রাখলে?
তিনি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে গিয়ে আমার
বিরূদ্ধে নালিশ করলেন। তিনি আমাকে ডাকালেন। আমি উপস্থিত হলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন,
তুমি কি দিনভর রোযা রাখ? আমি বললাম হ্যাঁ।
তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি রাতভর নামায পড়? আমি বললাম হ্যাঁ। তিনি বললেন, কিন্তু আমি রোযা রাখি
ও রোযা ছাড়ি, নামায পড়ি ও ঘুমাই, স্ত্রীদের
সাথে মেলামেশা করি। যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতের প্রতি আগ্রহ রাখে না সে আমার
দলভুক্ত না। -[মুসনাদে আহমাদঃ হাদিস নং- ৬৪৪১]
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু
তা’আলা ‘আনহা হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন : বিবাহ আমার সুন্নাত। যে আমার সুন্নাত অনুযায়ী আমল করে না,
সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। তোমরা বিবাহ করো, কারণ আমি আমার উম্মতের আধিক্য নিয়ে আল্লাহর দরবারে গর্ব করবো। যার
সামর্থ্য আছে সে অবশ্যই বিবাহ করবে আর যার সামর্থ্য নেই তার উপর কর্তব্য হলো রোজা
রাখা। কারণ, রোজা তার জন্য প্রতিষেধক। -[ইবনে মাজাহ]
সুন্নাতের অর্থ
হল রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবাগণের আদর্শঃ হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্র্ণিত। রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : বানী-ইসরাইলীগণ বাহাত্তর দলে বিভক্ত
হয়েছিল আর আমার উম্মাত বিভক্ত হবে তিয়াত্তর দলে, সকলেই জাহান্নামে
যাবে, কিন্তু একটি মাত্র দল জান্নাতে যাবে। সাহাবাগণ (রা)
জিজ্ঞাসা করলেন- এই দল কারা? রসূলুলাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন : যারা আমার ও আমার সাহাবাগণের সুন্নাতের উপর কায়েম থাকবে। - (তিরমিযীঃ
২৫৭৮, আবু দাউদ, তারগীবঃ ৪৮)
যারা শোকে বিলাপ
করে, শরীর ক্ষত-বিক্ষত করে, মাথা নেড়া করে এবং কাপড় ছেঁড়েঃ হযরত
আবূ বুরদা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন: “আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রোগ
যন্ত্রণায় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন, তখন তাঁর মাথা পরিবারস্থ কোন
এক মহিলার কোলে ছিল। মহিলাটি চেঁচিয়ে কান্না করতেছিল। কিন্তু তার
কান্না বন্ধ করার মত শক্তি তাঁর ছিল না। পরে যখন তিনি হুঁশ ফিরে পেলেন তখন
বললেন: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের
থেকে মুক্ত আমিও তাদের থেকে মুক্ত। বন্তুতঃ তিনি সেসব নারীদের থেকে মুক্ত
যারা শোকে বিলাপ করে, মাথা নেড়া করে এবং কাপড় ছেঁড়ে।” -[মুত্তাফাকুন 'আলাইহি, বুখারী:
১২৯৬, মুসলিম: ১০৪]
আল্লাহ
তা’য়ালা আমাদের সবাইকে তাঁর দ্বীনের খেদমতের জন্য কবুল করুন!
উল্লেখিত বিষয়সমূহে সাবধানতা অবলম্বনের তৌফিক দান করুন! রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা (রাদিয়াল্লাহুম)-গনের আদর্শের উপর সর্বদা কায়েম
রাখুন! তাঁদের বরকতময় জামাআতের সংগে আমাদের হাশর করুন! আর রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে জান্নাত লাভের তৌফিক দান করুন! আ-মী-ন।
No comments:
Post a Comment