Monday, November 10, 2014

ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় কল্যাণময় অভিবাদন


ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় কল্যাণময় অভিবাদন
ডাঃ গাজী মোঃ নজরুল ইসলাম

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি রব্বুল আলামীন। দুরুদ ও সালাম রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি, তার পরিবারবর্গ, বংশধর, সাহাবায়ে কিরাম (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) ও সালেহীণ (রহমাতুল্লাহি আলাইহিম)-গণের প্রতি। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহাম্মাদ (স) আল্লাহর বান্দা ও রসূল। নিশ্চয়ই শুভ পরিণতি কেবলমাত্র রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খুলাফায়ে রাশিদীনে এবং সাহাবা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম)-গণের অনুসৃত কল্যাণময় আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই নিহিত।

ইসলামের কল্যাণময় পারস্পরিক অবিভাধন হল সালাম, যার মাঝে নিহিত রয়েছে পারস্পরিক নিরাপত্তার ঘোষণা ও কল্যাণ কামনা। সালাম বিনিময় প্রসংগে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন : তোমাদেরকে যখন সালাম দেয়া হয় তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম জবাব দাও অথবা তারই অনুরূপ জবাব দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী।” -[সূরা নিসা: আয়াত- ৮৬]

সালাম হল দোয়াঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন : যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম দাও। উত্তম দোয়া স্বরূপ, যা আল্লাহর নিকট হতে বরকতময় ও পবিত্র।” -[সূরা নূরঃ ৬১]

সালাম হল কারো গৃহে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনাঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন: হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।” -[সূরা নূরঃ আয়াত২৭]

সালাম ইসলামের সর্বোত্তম আদর্শঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত এক ব্যক্তি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করে- ইসলামের কোন আদর্শটি সর্বোত্তম? তিনি (রসূলুল্লাহ্) বললেন : “তুমি খাদ্য খাওয়াবে ও চেনা-অচেনা সবাইকে সালাম দিবে।” (বুখারীঃ নং-১২ ও মুসলিমঃ নং-৩৯)

সালাম প্রদানে উত্তম পদ্ধতিঃ হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বলল : আসসালামু আলাইকুম তিনি তার সালামের উত্তর দিলেন, অত:পর সে বসে গেল তারপর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : দশ” (নেকি)। এরপর অন্য একজন এসে বললো : “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ তিনি তার উত্তর দিলেন অত:পর সে বসে গেল নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : বিশ” (নেকি) এরপর আরো একজন এসে বললো : “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ তিনি তারও উত্তর দিলেন অত:পর সে বসে গেল অত:পর তিনি বললেন: ত্রিশ” (নেকি)। -(আবু দাউদঃ ৫১৯৫ ও তিরমিযীঃ ২৬৮৯)

প্রথমে সালাম প্রদানকারীর ফজিলতঃ হযরত আবু আইয়ূব আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “তিন রাত্রের অধিক কোন মুসলমানের জন্য তার ভাই থেকে (কথা না বলে) পথৃক থাকা জায়েজ নয়। তাদের উভয়ের (চলা-ফেরায়) সাক্ষাত ঘটে কিন্তু এও তার থেকে বিমখু হয় সেও তার থেকে বিমখু হয়। প্রকৃতপক্ষে তাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি হলো, যে প্রথমে সালাম প্রদান করবে।” -(বুখারীঃ নং ৬০৭৭ ও মুসলিমঃ নং ২৫৬০-শব্দগুলি মুসলিম এর)

অন্য বর্ণনায়ঃ হযরত আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে প্রথমে সালাম প্রদান করে।” -(আবু দাউদঃ ৫১৯৭ শব্দগুলি তার ও তিরমিযীঃ ২৬৯৪)

প্রথমে কে সালাম প্রদান করবেঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ছোট বড় কে, চলমান ব্যক্তি বসা ব্যক্তিকে এবং অল্প সংখ্যক অধিক সংখ্যককে সালাম প্রদান করবে।” (বুখারীঃ ৬০৭৭ ও মুসলিমঃ ২৫৬-শব্দগুলি তার)

হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : আরোহী ব্যক্তি পদাতিক ব্যক্তিকে, পদাতিক ব্যক্তি উপবিষ্ট ব্যক্তিকে এবং অল্প সংখ্যক বেশি সংখ্যককে সালাম প্রদান করবে।” (আবু দাউদঃ ৫১৯৭-শব্দগুলি তার ও তিরমিযীঃ ২৬৯৪)

নারী ও শিশুদের প্রতি সালামঃ হযরত আসমা বিনতে ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মহিলা সমাজের নিকট দিয়ে অতিবাহিত হওয়ার প্রাক্কালে আমাদের প্রতি সালাম প্রদান করেছেন।” -(বুখারীঃ ৬২৩১ ও মুসলিমঃ ২১৬০)

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি শিশুদের নিকট দিয়ে অতিবাহিত হওয়ার সময় তাদের প্রতি সালাম প্রদান করেন এবং বলেন : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরূপ করতেন। -(বুখারীঃ ৬২৩২ ও মুসলিমঃ ২১৬০)

আগমন ও প্রস্থানের সময় সালামঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “তোমাদের কোন ব্যক্তি যখন সমাবেশে উপস্থিত হবে, সে যেন সালাম প্রদান করে এবং যখন প্রস্থান করার ইচ্ছা করে তখনও যেন সালাম প্রদান করে, শেষবারের চেয়ে প্রথমবার সালাম প্রদান অগ্রাধিকার রাখে না। (বরং আগমন ও প্রস্থান উভয় সময়ে সালামের বিধান একই)।” -( আবু দাউদঃ ৫২০৮ ও তিরমিযীঃ ২৭০৬ - সিলসিলা সহীহাঃ ১৮৩)

ফেতনার আশংকা মুক্ত হলে নারীরা পুরুষকে সালাম প্রদান করতে পারবেঃ হযরত উম্মে হানী বিনতে আবু তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মক্কা বিজয়ের বছর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট গেলাম তখন তাঁকে গোসল করা অবস্থায় পেলাম, আর তাঁর মেয়ে ফাতেমা তখন তাঁকে আড়াল করেছিল। অত:পর আমি তাঁকে সালাম প্রদান করলাম। তিনি বললেন:কে এই মহিলা?” আমি বললাম: আমি উম্মে হানী বিনতে আবু তালেব। তারপর তিনি বললেন: মারহাবা উম্মে হানী।” -(বুখারীঃ ৬১৫৮-শব্দগুলি তার ও মুসলিমঃ ৩৩৬)

অনপুস্থিত ব্যক্তির সালাম ও জবাবের পদ্ধতিঃ হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন : হে আয়েশা জিবরীল তোমাকে সালাম দিয়েছেন। আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা) উত্তরে বললেন : ওয়া আলাইহিস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহুআপনি যা দেখছেন আমি তো তা দেখি না।” -(বুখারীঃ ৩২১৭-শব্দগুলি তার ও মুসলিমঃ ২৪৪৭)

অন্য বর্ণনাঃ জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে বলল : আমার পিতা আপনাকে সালাম প্রদান করেছেন, তিনি জবাবে বললেন : আলাইকাস সালাম ওয়া আলা আবীকাস সালাম।” -( আহমাদঃ ২৩৪৯২ ও আবু দাউদঃ ৫২৩১-শব্দগুলি তার)

সালাম শ্রবণ করা না গেলে তিনবার প্রদান করার বিধানঃ হযরতআনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোন কথা বলতেন তা তিনবার পুনরাবৃত্তি করতেন, যেন তা (উত্তমরূপে) বুঝা যায় এবং যখন কোন দলের নিকট আসতেন, তাদের প্রতি তিনবার সালাম প্রদান করতেন। (বুখারীঃ ৯৫)

সমাবেশ বা জামায়েতের প্রতি সালামের বিধানঃ আলী ইবনে আবু তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “কোন জামাত বা দল যদি অতিবাহিত হয় তবে তাদের মধ্য থেকে একজন সালাম প্রদান করাই যথেষ্ট অনুরূপ বসা ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে একজনের উত্তর প্রদানই যথেষ্ট।” (আবু দাউদঃ ৫২১০ - সিলসিলা সহীহাঃ ১৪১২ ও ইরওয়াঃ ৭৭৮)

পেশাব-পায়খানা করা অবস্থায় সালাম দেয়া-নেয়া নিষেধঃ হযরত ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পেশাব করছিলেন এমতাবস্থায় জনৈক ব্যক্তি অতিবাহিত হয় এবং সালাম প্রদান করে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সালামের জবান দেননি।” -(মুসলিমঃ ৩৭০)

হযরত মুহাজির ইবনে কুনফুয রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পেশাব করছিলেন, এমবতাবস্থায় সে এসে তাঁকে সালাম প্রদান করে। কিন্তু তিনি (পেশাব থেকেঅবসর হয়ে) ওযু না করা পর্যন্ত তার সালামের উত্তর দেননি। অত:পর তিনি তার নিকট ওজর পেশ করেন এবং বলেন: অপবিত্র অবস্থায় আমি আল্লাহর নাম জিকির করব তা আমি অপছন্দ করি।” (আবু দাউদঃ ১৭-শব্দগুলি তার ও নাসাঈঃ ৩৮)

আলাইকাস সালামদ্বারা সালাম প্রদান নিষেধঃ হযরত জাবের ইবনে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে বললাম : আলাইকাস সালাম’ তিনি বললেন : ‘আলাইকাস সালাম’ বলো না, বরং বল: আস সালামু আলাইকা’----”-(আবু দাউদঃ ৫২০৯ ও তিরমিযীঃ ২৭২২) অন্য বর্ণনায়ঃ .... “কেননা আলাইকাস সালামহলো মৃত্যুদের জন্য সালাম।” -( আবু দাউদঃ ৫২০৯)

অমুসলিমদেরকে সালাম ও জবাবঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “তোমরা ইহুদি ও খ্রীস্টানদেরকে সালাম দিওনা। আর যখন তাদের কার সাথে কোন রাস্তায় সাক্ষাত হবে তখন তাকে সংকীর্ণ রাস্তাতে বাধ্য কর।” (মুসলিমঃ ২১৬৭)

এ প্রসংগে অন্য বর্ণনাঃ হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যখন তোমাদেরকে আহলে কিতাব সালাম প্রদান করে উত্তরে তোমরা বলো : ওয়া আলাইকুম” -(বুখারীঃ ৬২৫৮ ও মুসলিমঃ ২১৬৩)

মুসলিম ও কাফের মিশ্রিত সমাবেশ অতিক্রমকালে শুধু মুসলিমদের উদ্দেশ্যে সালাম প্রদান করাঃ হযরত উসামা ইবনে জায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদ ইবনে উবাদাহকে দেখতে আসেন যখন তিনি এমন এক সমাবেশ দিয়ে অতিবাহিত হন যার মাঝে মুসলমান, পৌত্তলিক, ‘মুশরিক ও ইয়াহুদিদের সংমিশ্রণ ছিল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের প্রতি সালাম প্রদান করলেন, অত:পর থেমে অবতরণ করেন এবং তাদেরকে আল্লাহর দিকে দাওয়াত প্রদান করেন ও তাদের প্রতি কুরআন তেলাওয়াত করেন।” -(বুখারীঃ ৫৬৬৩ ও মুসলিমঃ ১৭৯৮-শব্দগুলি তার)

সালামের ফজিলতঃ হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষন না ঈমান আন আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষন না একে অন্যকে ভালবাসবে । আমি কি তোমাদের তা বাতলে দেব না যা করলে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো, তোমরা পরস্পর বেশি বেশি সালাম বিনিময় করবে । -[মুসলিম : হাদিস ৯৬]

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর দ্বীনের জন্য কবুল করুন! রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা (রা)-গনের আদর্শের উপর সর্বদা কায়েম রাখুন এবং তাঁদের জামাআতের সংগে আমাদের হাশর করুন। আ-মী-ন!


No comments:

Post a Comment