মুমীনের জীবনে ঈমানের নূর বৃদ্ধির
মেহনতঃ পথ ও পদ্ধতি
ডাঃ গাজী মোঃ নজরুল ইসলাম
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা'য়ালার জন্য-
যিনি রব্বুল আ'লামীন। দুরদ ও সালাম
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি যিনি রহমাতুল্লিল আ'লামীন, তাঁর
পরিবারবর্গ, তাঁর বংশধর,
তাঁর সাহাবায়ে কিরাম (রাদিআল্লাহু আনহুম) ও সালিহীন (র) বান্দাগণের প্রতি। আমরা সাক্ষ্য
দিচ্ছি যে, আল্লাহ
ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহাম্মাদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর বান্দা
ও তাঁর রসূল। নিশ্চয়ই শুভ পরিণতি মুত্তাকীনদের জন্যই নির্ধারিত।
মুমিনীন
বান্দাগণের জীবনে ঈমানের উপর অবিচল থাকা এবং ঈমানের নুর বৃদ্ধির জন্য অবিরাম সাধনা
চালিয়ে যেতে হয়। কারণ শয়তান মানুষের মূল্যবান ঈমান ছিনতাইয়ের জন্য জীবনের বাঁকে
বাঁকে সর্বদা ওৎ পেতে থাকে। এ প্রসংগে পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াত এবং রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্য থেকে
কিছু বাছাইকৃত আয়াত ও হাদীস সকলের বিবেচনার জন্য পেশ করা হল।
শাহাদাতের উপর অবিচল
থাকার মাধ্যমেঃ আল্লাহ তা'য়ালা বলেন : নিশ্চয়ই
যারা বলে (ঘোষণা করে), আমাদের প্রভু হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ,
অতঃপর তারা (ঘোষণার উপর) অটল রয়েছে, তাদের
প্রতি (সুসংবাদ নিয়ে) ফিরিশতা অবতীর্ণ হয়, (এবং বলে যে)
তোমরা ভয় পেয়ো না, চিন্তা করো না আর সেই জান্নাতের সুসংবাদ
গ্রহণ কর যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে। পার্থিব জীবনেও আমরা তোমাদের
বন্ধু ছিলাম এবং পরকালেও থাকব, তোমাদের জন্য সেথায় রয়েছে,
যা কিছু তোমাদের বাসনা হবে আর তাও মজুদ রয়েছে, যা কিছু তোমরা চাইবে। আর এগুলো ক্ষমাশীল ও করুণাময়ের পক্ষ থেকে
মেহমানদারী। -(সূরা হা-মীম সিজদা : ৩০-৩২)
অধিক
পরিমাণে "লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ" বলার ফায়দাঃ হযরত আবু হুরায়রা
রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের ঈমানকে নবায়ন কর অর্থাৎ নূতন ও
সতেজ কর। জিজ্ঞাসা করা হল, কিভাবে আমাদের ঈমানকে নবায়ন ও নতুন করব।
উত্তরে তিনি বললেন, অধিক পরিমাণে "লা- ইলা-হা
ইল্লাল্লা-হ" বলো। - (মুসনাদে আহমাদ, তাবারানী ও তারগীবঃ
৪১০)
আল্লাহর আয়াতসমূহ
তিলাওয়াতের মাধ্যমেঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : নিশ্চয়ই মু’মিন তারা, আল্লাহর নাম
উচ্চারিত হলে যাদের হৃদয় বিগলিত হয়ে চমকে ওঠে, যখন তাদের
নিকট আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় আর তারা
কেবলমাত্র তাদের প্রভুর উপরেই ভরসা রাখে। যারা সালাত কায়েম করে এবং আমি যে জীবিকা
তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে- তারাই সত্যিকারের মুমিন। তাদের প্রভুর নিকট
তাদের জন্য রয়েছে মর্যাদা, ক্ষমা এবং সম্মানজনক জীবিকা।
-(সূরা আনফাল : ২-৪)
তিনি
আরও বলেন : “যখন তাদের কাছে এটা পাঠ করা হয় বা হল, তখন তারা বলে, আমরা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম বা আমরা এতে ঈমান আনি। এটা আমাদের পালনকর্তার/রবের পক্ষ থেকে আগত সত্য। আমরা এর পূর্বেও আজ্ঞাবহ বা মুসলিম ছিলাম।”-(সুরা কাসাসঃ আয়াত-৫৩)
কুরআন তিলাওয়াত ও
খিদমাতের জন্য সাধনার ফায়দাঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু
আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘আলকুরআনের সঙ্গীকে বলা হবে : কুরআন পাঠ কর, আর
মর্যাদার উচ্চশিখরে আরোহণ কর। আর তেলাওয়াত করতে থাক। যেমন দুনিয়াতে তেলাওয়াত
করছিলে; কেননা তোমার মর্যাদা হলো কুরআনের শেষ আয়াত পর্যন্ত
যা তুমি পাঠ করবে।” -[তিরমিযী, আবু
দাউদ ও ইবনে মাযাহ]
ইলমে
দ্বীন হাসিল করার জন্য সাধনার ফজিলতঃ হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি ইলমে দ্বীন হাসিল করার
উদ্দেশ্যে কোন রাস্তায় চলে আল্লাহ তাআলা এ কারণে তাকে জান্নাতের রাস্তাসমূহ থেকে
এক রাস্তায় চালিয়ে দেন। ফেরেশতাগণ তালেবে ইলমের সন্তুষ্টির জন্য আপন পাখা বিছিয়ে
দেন। আরেমের জন্য আসমান জমিনের সমস্ত মাখলুক এবং মাছ যা পানিতে রয়েছে সকলেই
মাগফিরাতের দুআ করে। নিঃসন্দেহে আবেদের উপর আলেমের ফযীলত এরূপ যেরূপ পূর্ণিমার
চাঁদের ফযীলত সমস্ত তারকারাজির উপর। নিঃসন্দেহে উলামায়ে কেরাম আম্বিয়া আলাইহিস
সালামের উত্তরাধিকারী। আর আম্বিয়াগণ দিনার ও দিরহাম এর উত্তারাধিকারী বানন না।
তারাতো ইলমের উত্তরাধিকারী বানান। অতএব যে ব্যক্তি ইলমে দ্বীন হাসিল করল, সে পরিপূর্ণ অংশ লাভ করল। -[সুনানে আবু দাউদঃ হাদীস
নং-৩৬৪১, মুসনাদুশ শামীনঃ হাদীস নং-১২৩১, কানযুল উম্মালঃ হাদীস নং-২৮৭৪৬]
মুমিনদের অন্তরে
প্রশান্তি নাযিল হওয়ার মাধ্যমেঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “তিনি মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরও ঈমান বেড়ে যায়। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের
বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ঈমান
এজন্যে বেড়ে যায়, যাতে তিনি ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার
নারীদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।
সেথায় তারা চিরকাল বসবাস করবে এবং যাতে তিনি তাদের পাপ মোচন করেন। এটাই আল্লাহর
কাছে মহাসাফল্য।” -[আল কুরআন: সূরা আল ফাতাহ, আয়াত ৪-৫]
প্রশান্তি
কিভাবে নাযিল হয়ঃ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ্
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি দ্বীনি ইলম অর্জনের উদ্দেশ্যে
কোন পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সুগম করে দেন। কোন একদল লোক যখন
আল্লাহ তা'য়ালার ঘর সমূহের মধ্যে কোথাও একত্র হয়ে আল্লাহর কিতাব পাঠ
এবং পরস্পর আলোচনা করতে থাকে তখন তাদের উপর সাকিনা অবতীর্ণ হতে থাকে, আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ তাদেরকে ঢেকে দেয়, ফিরিশতাগণ
তাদেরকে বেষ্টন করে নেন এবং আল্লাহ তাঁর নিকটবর্তী ফিরিশতাদের সামনে তাদের উল্লেখ
করে থাকেন। - (সহীহ্ মুসলিম)
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের
বিরোধিতাকারীদের সাথে সম্পর্কহীনতার মাধ্যমেঃ আল্লাহ্
রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : "আপনি মুমিনদের এমন কোন দল পাবেন না,
যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং আখিরাতের প্রতিও ঈমান রাখে- অথচ
তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতাকারীদেরকে ভালবাসে, যদিও
তারা তাদের পিতা, তাদের পুত্র, তাদের
ভাই বা তাদের আত্মীয়-স্বজনও হয়। আল্লাহ তাদের অন্তরে ঈমানকে সুদৃঢ় করে দিয়েছেন এবং
নিজের পক্ষ থেকে তাদেরকে রূহ (হিদায়াতের আলো) দিয়ে শক্তিশালী করেছেন। তিনি তাদেরকে
এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যে জান্নাতের নিচ দিয়ে ঝর্ণা সমূহ বয়ে যায়, সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন, তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। মনে রেখ! আল্লাহর দল
অবশ্যই কল্যাণপ্রাপ্ত হবে।" -(সুরা মুজাদালা : ২২)
তিনি
আরও বলেন : "হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্যকার কোন দল দ্বীন থেকে ফিরে গেলে
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের পরিবর্তে অচিরেই এমন অন্য দলকে নিয়ে আসবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং যাঁরা আল্লাহকে ভালবাসবে। তারা মুমিনদের প্রতি
কোমল ও কাফিরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং নিন্দুকের
নিন্দার ভয় করবে না। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা
তাকে এ অনুগ্রহ দান করেন। আল্লাহ অসীম প্রাচুর্যের অধিকারী, মহাজ্ঞানী।তোমাদের
বন্ধু তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং যারা ঈমান এনেছে তারা -
যারা বিনীত ভাবে রুকূর সাথে সালাত কায়িম করে ও যাকাত আদায় করে। যারা আল্লাহ,
তাঁর রাসূল ও মুমিনদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে নিশ্চয় তারাই হবে
আল্লাহর দল, তারা বিজয়ী হবেই।" -(সূরা মা-ইদাঃ ৫৪-৫৬ )
ঈমানের গুনাবলী অর্জনের সাধনার মাধ্যমেঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “নিশ্চয়ই মু’মিন
তারা, আল্লাহর নাম উচ্চারিত হলে যাদের হৃদয় বিগলিত হয়ে চমকে
ওঠে, যখন তাদের নিকট আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের
ঈমানকে সুদৃঢ় করে আর তারা কেবলমাত্র তাদের প্রভুর উপরেই ভরসা রাখে। যারা সালাত
কায়েম করে এবং আমি যে জীবিকা দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে- তারাই সত্যিকারের মুমিন।
তাদের প্রভুর নিকট তাদের জন্য রয়েছে মর্যাদা, ক্ষমা এবং
সম্মানজনক জীবিকা।” -(সূরা আনফাল : আয়াত ২-৪)
তিনি
আরও বলেন : “নিশ্চয়ই মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার
পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ,
অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ, সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ, ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ, বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ, দানশীল
নারী, রোযা পালণকারী পুরুষ, রোযা
পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক যিকরকারী
পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার।” -[সূরা আহযাবঃ আয়াত ৩৫
]
তিনি আরও বলেন : “অবশ্যই (ঐ সব) মু’মিনগণ সফল হয়েছে। যারা তাদের
সালাতে সমর্পিত প্রাণ, বিনয়ী ও নিষ্ঠাবান হয়। যারা বাজে কথা
ও কাজ থেকে দূরে থাকে। যারা তাদের যাবতীয় কার্যক্রম পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে। যারা
নিজেদের গুপ্তাঙ্গ হিফাযত করে তবে তাদের স্ত্রীদের এবং অধিকারভুক্ত দাসীদের
ক্ষেত্রে কোন দোষ নেই। যারা এ সীমা লংঘন করবে, তারাই হল
সীমালংঘনকারী। যারা নিজেদের আমানত রক্ষা করে এবং ওয়াদা পূরণ করে। যারা নিজেদের
সালাতের হিফাযত করে। তারাই হল সে সকল লোক, যারা উত্তরাধিকারী
হবে। উত্তরাধিকারী হবে জান্নাতুল ফিরদাউসের। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে।” -(সূরা মুমিনুনঃ আয়াত ১-১১)
তিনি আরও বলেন : যারা
বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা ঈমান এনেছি, কাজেই আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও আর আমাদেরকে দোযখের আযাব থেকে রক্ষা কর।
তারা ধৈর্য্যধারণকারী, সত্যবাদী, নির্দেশ
সম্পাদনকারী, সৎপথে ব্যয়কারী এবং শেষরাতে ক্ষমা
প্রার্থনাকারী। -[সুরা আলে ইমরান: ১৬-১৭]
আল্লাহ তা’য়ালা-কে বান্দার অভিভাবক বানানোর মাধ্যমেঃ মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন : যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের
করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত।
তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী,
চিরকাল তারা সেখানেই থাকবে। -(সূরা বাকারাহঃ আয়াত ২৫৭)
তিনি আরও বলেনঃ "তিনিই
সে মহান সত্তা যিনি তাঁর বান্দার ওপর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করেছেন, যেন তিনি তোমাদের (এর দ্বারা জাহেলিয়াতের) অন্ধকার থেকে ঈমানের আলোর দিকে
বের করে নিতে পারেন; আল্লাহ তা'লা
তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু ও একান্ত করুণাময়।" -[সূরা
হাদীদঃ আয়াত ৯]
জিহাদের ময়দানে শত্রু বাহিনীর সম্মুখীন হওয়ার মাধ্যমেঃ মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন : যখন মুমিনগণ শত্রু বাহিনী দেখল, তখন তারা বলল,
আল্লাহ ও তাঁর রসূল আমাদেরকে এরই ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্য
বলেছেন- এতে তাদের ঈমান ও আত্মসমর্পন বৃদ্ধি পেল। - [সূরা আহযাবঃ আয়াত ২২]
হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতেই বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘‘হাসবুনাল্লাহু অনি’মাল অকীল’’ কথাটি
ইব্রাহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বলেছিলেন, যখন
তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি
তখন বলেছিলেন যখন লোকেরা বলেছিল যে, ‘(কাফের) লোকেরা তোমাদের
মুকাবিলার জন্য সমবেত হয়েছে; ফলে তোমরা তাদেরকে ভয় কর।’ কিন্তু এ
কথা তাদের ঈমানকে বাড়িয়ে দিল এবং তারা বলল, ‘‘হাসবুনাল্লাহ্
অনি‘মাল অকীল।’’ অর্থাৎ আল্লাহই আমাদের
জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক। -(বুখারী) অন্য এক বর্ণনায় ইবনে আব্বাস
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আগুনে
নিক্ষিপ্ত হওয়ার সময় ইব্রাহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শেষ কথা ছিল,
‘‘হাসবিয়াল্লাহ্ অনি‘মাল অকীল।’’ -[ সহীহুল
বুখারী ৪৫৬৩, ৪৫৬৪ ]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রাণাধিক মহব্বত করার
মাধ্যমেঃ হযরত আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ও আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে
বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ঐ সত্তার শপথ! যার হাতে
আমার প্রাণ, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে
পারবে না, যতক্ষণ আমি তার নিকট নিজ নিজ পিতা-মাতা, সন্তান ও সকল মানুষ হতে প্রিয় না হই। -(সহীহ বুখারী)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হেশাম (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একদা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর
সাথে ছিলাম। তখন তিনি হযরত সায়্যিদুনা উমর ফারুক (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এর হাত ধরা
অবস্থায় ছিলেন। হযরত উমর ফারুক (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে আপনি আমার
প্রাণ ছাড়া সর্বাধিক প্রিয়। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না
সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, (তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না) যে পর্যন্ত না আমি তোমার কাছে
তোমার প্রাণাপেক্ষাও অধিক প্রিয় হই। তারপর হযরত উমর ফারুক (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)
বললেন, আল্লাহর কসম, এখনই আপনি আমার
কাছে আমার প্রাণাপেক্ষাও অধিক প্রিয়। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন হে উমর! এখন তুমি পূর্ণ মুমিনের মর্যাদা লাভ করলে। -[বুখারী শরীফঃ হাদীস নং-৬১৭৩]
হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। এক সাহাবী আবেদন করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ক্বিয়ামত কখন হবে? উত্তরে
আল্লাহর রাসূল জিজ্ঞেস করলেন, ক্বিয়ামতের জন্য তুমি কী
প্রস্তুতি নিয়েছ? সাহাবীটি আরয করলেন, ইয়া
রাসূলাল্লাহ্! তজ্জন্য আমি তেমন কোন প্রস্তুতি নিতে পারিনি; তবে
আমি আমার আল্লাহ্ ও আল্লাহর রাসূলকে ভালবাসি । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ "তুমি যাকে ভালবাস
ক্বিয়ামত দিবসে তুমি তার সাথে থাকবে"। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
বলেনঃ "ইসলামের আবির্ভার পরে আমি মুসলমানদেরকে এরূপ খুশি হতে দেখিনি, যেরূপ একথা গুলো শুনে খুশি হয়েছেন"। -(বুখারী ও মুসলিম)
কামনা-বাসনা রসূলের আদর্শের অনুবর্তী হওয়ার মাধ্যমেঃ আল্লাহ তা’য়ালা বলেন : (হে রাসূল! আপনি)
বলুন! যদি তোমরা আল্লাহর ভালবাসা পেতে চাও, তবে আমার অনুসরণ
কর। তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ সমুহ মাফ করে দিবেন।
নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াময়। -(সূরা আলে ইমরান : ৩১)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত
কেউ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না তার
কামনা-বাসনা আমার আনীত আদর্শের অনুবর্তী হবে -(শারহুস সুন্নাহ)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
বানী-ইসরাইলীগণ বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল আর আমার উম্মাত বিভক্ত হবে
তিয়াত্তর দলে, সকলেই জাহান্নামে যাবে কিন্তু একটি মাত্র
দল জান্নাতে যাবে। সাহাবাগণ (রা) জিজ্ঞাসা করলেন- এই দল কারা? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : যারা আমার ও আমার সাহাবাগণের
আদর্শের উপর কায়েম থাকবে। -(তিরমিজি-২৫৭৮ : হাসান, আবু দাউদ ও সহীহ তারগীব-৪৮)
আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব স্থাপন ও আল্লাহর
জন্য শত্রুতা পোষণঃ আবু উমামা (রাদিয়াল্লাহু আনহু)
থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি শুধু
আল্লাহর জন্য কারো সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করল, আল্লাহর
জন্য শত্রুতা পোষণ করল, আল্লাহর জন্য কাউকে দান করল এবং
আল্লাহর (সম্পদ) ব্যয় করা থেকে বিরত থাকল, নিশ্চয়ই সে
স্বীয় ঈমানকে পরিপূর্ণ করল । -(তিরমিজি ও
আবু দাউদ)
একই বিষয়েঃ হযরত মু'আয ইবন জাবাল (রাদিয়াল্লাহু
আনহু) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাউকে কিছু দেয়, আল্লাহরই জন্য কিছু দেওয়া থেকে বিরত থাকে এবং আল্লাহর জন্য
কাউকে ভালোবাসে, আল্লাহরই জন্য কারও প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে,
সে তার ঈমান পরিপূর্ণ করে ফেলল। (তিরমিযি-২৪৪৫, আবু দাউদ-৪০৬১, মুসনাদ আহমাদ-১৫০৬৪)
নেক কাজ যখন আনন্দিত করেঃ হযরত আবু উমামা
(রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞাসা করল, ঈমান কি? তিনি ইরশাদ করলেন, যদি তোমার নেক আমল তোমাকে আনন্দিত
করে এবং তোমার মন্দ কাজ তোমাকে দুঃখিত করে তবে তুমি মুমিন। -{মুসনাদে আহমাদঃ হাদিস নং- ২১১৩৮,২১১৪৫,২১১৭৪, মুস্তাদারেক হাকেমঃ হাদিস নং-২২১৭}
নিজের পছন্দ মোতাবেক অন্য ভাইয়ের জন্য পছন্দ করলেঃ হযরত আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে হতে কেহই ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষন না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করবে যা সে নিজের
জন্য পছন্দ করে। -[সহীহ বুখারী,
সহীহ মুসলিম]
উত্তম চরিত্র গঠনের সাধনার মাধ্যমেঃ হযরত আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্র্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তির চরিত্র ও ব্যবহার সবচেয়ে উত্তম,
ঈমানের দিক থেকে সেই পরিপূর্ণ মুমিন। তোমাদের মধ্যে তারাই উত্তম যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। (তিরমিযী: হাসান ও সহীহ)
সত্যপ্রীতি বা সত্যনিষ্ঠা অবলম্বনের মাধ্যেমেঃ হযরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “সত্যপ্রীতি বা সত্যনিষ্ঠা সততার পথ দেখায় আর সততা
(মানুষকে) জান্নাতের দিকে চালিত করে। মানুষ সত্যের অনুশীলন করতে করতে এক পর্যায়ে
আল্লাহর নিকট সিদ্দিক (সত্যবাদী) নামে পরিচিত হয়। পক্ষান্তরে মিথ্যা অশ্লীলতার
দিকে চালিত করে আর অশ্লীলতা মানুষকে জাহান্নামের (আগুনের) দিকে নিয়ে যায়। মানুষ
মিথ্যার অনুশীলন করতে করতে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট মিথ্যাবাদী নামে পরিচিত হয়।"
-[বুখারী ও মুসলিম]
আল্লাহওয়ালা উলামাগণের সোহবাত ইলম চ্চার মাধ্যমেঃ হযরত আবু বাকারাহ (রাদিয়াল্লাহু
আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তুমি হয়ত আলেম হও, অথবা তালেবে এলেম হও, অথবা মনযোগ সহকারে এলেম
শ্রবণকারী হও অথবা এলম ও আলেমদের মুহাব্বাতকারী হও। (এই চার ব্যতীত) পঞ্চম প্রকার হয়ো না, নতুবা ধ্বংস হয়ে যাবে। পঞ্চম প্রকার হলো এই যে, তুমি
এলম ও আলেমদের সাথে শত্রুতা পোষণ কর। -{শুয়াবুল ঈমান,বাইহাকী,হাদিস-১৫৭৯, আল মু'জামুল আওসাত, হাদিস-৫৩১৩..., মুসনাদ বাজ্জার,হাদিস-৩০৮৯, হুলিয়াতুল
আউলিয়া, হাদিস- ১০৬৩৬,কিতাবুল ইলম,হাদিস-৩৬, আল মু'জামুল সাগির, হাদিস-৭৮৮}
আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল এবং দ্বীনের প্রতি সন্তুষ্টি জ্ঞাপনের মাধ্যমেঃ হযরত আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে
শুনেছিঃ ঈমানের স্বাদ গ্রহণ করেছে সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহকে
রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নবী ও রাসূল হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ
করে নিয়েছে। -[মুসনাদে আহমেদ]
আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল এবং দ্বীনের প্রতি সন্তুষ্টি জ্ঞাপনের ফায়দাঃ হযরত
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি বলে
যে আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নবী হিসেবে পেয়ে আমি সন্তুষ্ট। তার জন্য
জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। -[আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫২৯]
চোখের দৃষ্টির হিফাজতের মাধ্যমেঃ হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে মুসলমানের প্রথম
দৃষ্টি (অর্থাৎ অনিচ্ছাকৃত) কোন মহিলার সৌন্দর্যের প্রতি পড়ে আর সে সাথে সাথে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয় আল্লাহ
তাআলা তাকে এমন এক ইবাদতের তাওফীক দান করেন যার স্বাদ সে অন্তরে অনূভব করতে থাকে। -(মুসনাদে আহমাদ- ৫/ ২৬৪. মেশকাত- ২৭০.তারগীব- ৩/২৩)
গোনাহের কারণে ঈমানের
নুর লোপ পায়ঃ হযরত আবু হুরায়রা
রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যভিচারী ব্যভিচারে লিপ্ত অবস্থায়
মুমিন থাকেনা। কোন চোর চুরি করা অবস্থায়। কোন শরাবখোর শরাব পান করা অবস্থায়
মুমিন থাকে না। মানুষের চোখের সামনে কোন নিরীহ লোকের উপর অক্রমনকারী মুমিন থাকে
না। -(বুখারী, মুসলিম ও নাসায়ী)
অহংকারের কারণে ঈমানের নুর লোপ পায়ঃ হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "যার অন্তরে অণু পরিমান
অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা। এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলঃ যদি কেউ সুন্দর
জামা আর সুন্দর জুতা পরিধান করতে ভালবাসে? তখন রাসূল (সাঃ)
বললেন,
নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহংকার
মানে হল সত্য প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা।" -[সহীহ্ মুসলিমঃ
হাদীস নং ১৬৪]
আল্লাহ তায়ালা আমাদের
সবাইকে তাঁর মহান দ্বীনের খেদমতের জন্য কবুল করুন! রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম)-গনের আদর্শের উপর সর্বদা কায়েম রাখুন!
এবং তাঁদের সুমহান জামাআতের সংগে আমাদের হাশর করুন! আ-মী-ন।
No comments:
Post a Comment